জলবায়ু পরিবর্তনে আগামী দশকে বন্যার ঝুঁকি আরও বাড়বে
লিহান লিমা : জার্মানি থেকে নিউইয়র্ক, এই গ্রীষ্মে বন্যার ভয়াবহ রূপ দেখেছে বিশ্ব। নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, আগামী দশকে আরো অনেক মানুষ বন্যাপ্রবণ এলাকায় বাস করবে এবং অন্যান্য স্থানের তুলনায় বন্যার সম্ভাব্য ঝুঁকিতে থাকা এসব অঞ্চলে জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কমপক্ষে ৫৭টি দেশ বন্যার ঝুঁকিতে সংবেদনশীল অবস্থায় রয়েছে। গার্ডিয়ান
ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় ২০০০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বন্যার সময় দৈনিক স্যাটেলাইট তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। এই সময়ের মধ্যে ২৫ কোটি থেকে ২৯ কোটি মানুষ সরাসরি বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গবেষণার লেখকরা আরো দেখেছেন, এই সব অঞ্চলে জনসংখ্যা ৩৪.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মোট বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির ১৮.৬ শতাংশ। অর্থাৎ, আগামী দশক থেকেই আশঙ্কা করা অনুমানের তুলনায় দশগুণ বেশি মানুষ বন্যার হুমকিতে পড়বে।
এতে বলা হয়, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বন্যার কারণে ৬১ হাজার ৫০ কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হলেও বন্যা প্রস্তুতি ও প্রশমনের জন্য দুর্যোগ তহবিলের মাত্র ১৩ শতাংশ এই খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। নতুন বিশ্লেষণে অতিবৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা ছাড়াও বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়া এবং তুষার গলে যাওয়াকেও বন্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের পূর্বাভাস বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বন্যা কবলিত মানুষের অনুপাত আরো বিস্তৃত হবে। গবেষণার লেখকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে ৫৭টি দেশ-বিশেষ করে উত্তর আমেরিকা, মধ্য এশিয়া এবং মধ্য আফ্রিকার অংশ-এদের জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে এবং তারা বন্যার সম্মুখীন হবে।
গবেষকরা লেখেন, ঝুঁকি মোকাবেলার একটি সম্ভাব্য কৌশল হবে বন্যা হবে এমন এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেয়া। ২০০৪ সালের সুনামির পর শ্রীলংকা উপকূলের বাসিন্দাদের উপকূলরেখা থেকে ১০০ মিটার সরিয়ে নেয়। একইভাবে বন্যাপ্রবণ এলাক থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে নেয়ার কথা ভাবছে ভারত।