আগামী মাসে নির্মাণকাজ শুরু, বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর আট বিভাগীয় শহরে হচ্ছে বিশেষায়িত ক্যান্সার হাসপাতাল
সুজিৎ নন্দী : ক্যানসার রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা উন্নত করতে আটটি বিভাগীয় শহরে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১শ শয্যাবিশিষ্ট বিশ্বমানের পূর্ণাঙ্গ ক্যানসার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। ক্যান্সারের পাশাপাশি কার্ডিয়াক বিভাগও থাকবে। আগামী মাসে যে কোন সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই হাসপাতালগুলো উদ্বোধন করবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে সব কটি হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ হবে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে সময় কিছুটা বেশি লাগতে পারে।
ইতিমধ্যে ছয়টি বিভাগীয় শহরে ক্যানসার হাসপাতাল স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে দুটির কাজ পুরোদমে চলছে। ৪টির টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা ও খুলনা স্থান পরিবর্তন হওয়ায় এ দুটি হাসপাতাল নির্মাণের কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার বলেন, আটটি বিভাগীয় শহরে আমাদের আটটি বিশেষায়িত ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। কাজগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করে আমরা মনিটরিং ও মূল্যায়ন কমিটি গঠন করেছি। প্রধান প্রকৌশলী আরো বলেন, কাজের অগ্রগতিসহ সার্বিক বিষয়ে প্রতি মাসে প্রতিবেদন জমা দেয়া হচ্ছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। এই আটটি হাসপাতাল নির্মাণ শেষ হলে দেশের সব জনগোষ্ঠীর জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থায় এক মাইলফল সেবা নিশ্চিত হবে। গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২ হাজার ৩৮৮ কোটি ৩৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আটটি ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাব জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাস হয়।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার হাসপাতালটি তৈরির কথা ছিলো উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে। একই অবস্থা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্ষেত্রে। তবে শেষ মুহূর্তে এটি পরিবর্তন হতে পারে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসায় হাসপাতাল স্থাপিত হবে। পাশাপাশি বরিশালে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ময়মনসিংহে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সিলেটে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসায় বিশেষায়িত এ চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে।
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য হলো ক্যানসার চিকিৎসায় বৈদেশিক নির্ভরতা কমিয়ে আনাসহ দেশে ক্যানসার চিকিৎসাসেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা। এসব হাসপাতালে সূচনাতেই ক্যানসার রোগ নির্ণয় এবং সময়মতো রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।
পাশাপাশি কার্ডিয়াক ইউনিটও থাকবে। গণপূর্তের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, প্রস্তাবিত মেডিকেল কলেজ এলাকায় দুটি বেজমেন্টসহ ১৫তলা একটি ভবন নির্মাণ করা হবে। এতে বেজমেন্ট থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত ক্যানসার চিকিৎসাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এছাড়াও টিপিএস কক্ষ, চিকিৎসকদের কক্ষ, টয়লেট, প্ল্যানিং রুম, ব্রাকিথেরাপি মেশিনের পাশে ব্রাকি ইনসারশন কক্ষ, মিনি ওটি, রোগী নিবন্ধন কর্নার, মোল্ড রুমসহ নানা ব্যবস্থা থাকবে।
এসবের পাশাপাশি ইমার্জেন্সি, ওপিডি, ওয়েটিং রুম, তথ্যকেন্দ্র, সাক্ষাৎ রুম, কন্সলের রুম, ক্যানসার স্কিনিং রুম, ফলোআপ রুম, রিমার্কি রুম, ড্রাগ, ফিজিশিস্ট ও টেকনোলজিরুম, রেডিও থেরাপি টেকনোলজিস্ট রুম থাকবে।