সোহেল রহমান : অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সপ্তম দফায় বেসরকারি খাতে আরও ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে চাল আমদানির জন্য মনোনয়ন দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ দফায় মোট ১ লাখ ১ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭৭ হাজার মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল এবং ২৪ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানি করা হবে। মনোনীত প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাল আমদানির অনুমতি প্রদানের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহে (১৭-৩০ আগস্ট) সাত দফায় ৪৩৬টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে শর্ত সাপেক্ষে মোট ১৬ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিক টন চাল (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ ভাঙ্গাদানা বিশিষ্ট) আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নন-বাসমতি সিদ্ধ চালের পরিমাণ ১৪ লাখ ৮৩ হাজার মেট্রিক টন এবং আতপ চালের পরিমাণ ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। অনুমতিপ্রাপ্ত আমদানিকারকদের আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরো চাল দেশে বাজারজাত করতে হবে।
সূত্রমতে, খাদ্যশস্যের নিরাপত্তা মজুত সুসংহত করা এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বেসরকারি খাতে চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মনোনীত আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কোন্ প্রতিষ্ঠান কী পরিমাণ চাল আমদানি করতে পারবে Ñতা সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে এবং সকল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের জন্য ৬টি শর্ত বেঁধে দেয়া হয়েছে।
এগুলো হচ্ছেÑ বরাদ্দ আদেশ জারির ১৫ দিনের মধ্যে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে হবে এবং এ সংক্রান্ত তথ্য (বিল অব এন্ট্রিসহ) খাদ্য মন্ত্রণালয়কে ই-মেইলে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করতে হবে; বরাদ্দ পাওয়া আমদানিকারকদের আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরো চাল দেশে বাজারজাত করতে হবে; বরাদ্দের অতিরিক্ত আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) ইস্যু/জারি করা যাবে না; আমদানি করা চাল স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠানের নামে প্যাকেটজাত করা যাবে না এবং আমদানি করা চাল প্ল্যাস্টিকের বস্তায় বিক্রি করতে হবে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকে এলসি খুলতে ব্যর্থ হলে বরাদ্দ বাতিল হয়ে যাবে বলেও শর্ত দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, দেশের অভ্যন্তরীণ চালের বাজার অনেকদিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। এমন কী বোরো মৌসুমেও চালের বাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী। প্রতি কেজি মোটা চালের দর ৫০ টাকার কাছাকাছি। চিকন চালের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এ প্রেক্ষাপটে দাম স্থিতিশীল রাখতে শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
জানা যায়, চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর অনুরোধ জানিয়ে গত ৬ জুলাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-কে চিঠি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। এ ধারাবাহিকতায় ১২ আগস্ট চাল আমদানির শুল্ক কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এনবিআর। প্রজ্ঞাপনে চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সুবিধা আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বহাল থাকবে। এর আগে গত বছরও দাম বাড়তে থাকায় চালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশে নামানো হয়েছিল, যার মেয়াদ গত এপ্রিলে শেষ হয়েছে।