আবারও চালু হচ্ছে বিলিয়ন ডলারের বিমান রুট
রাশিদ রিয়াজ : গত বছর মার্চ থেকে কোভিড মহামারি শুরু হবার পর সারাবিশে^ ভ্রমণকারীরা মাটির চেয়ে আকাশে বেশি দুর্যোগ প্রত্যক্ষ করেন। আর তা হচ্ছে একের পর এক এয়ারলাইন্সগুলোর বন্ধ হয়ে যাওয়া। কিন্তু এখন আবার সেই ভ্রমণকারীদের বিমানে বসে সিটবেল্ট বেঁধে নেওয়ার সময় এসেছে।
সিএনএন এক প্রতিবেদনে বলছে, অন্তত ১০টি সূচক বলছে এয়ারলাইন্সগুলোর বিমান উড্ডয়নের সময়ে ফের ফিরে আসছে। ভ্রমণ না করার জন্যে যেমন যুক্তরাষ্ট্রের তালিকায় নতুন নাম হিসেবে এসেছে বাহামা, সিন্ট মার্টিন, হাইতি, কসোভো, লেবানন ও মরক্কো। এসব স্থানকে এখন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে মার্কিন ভ্রমণকারীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন নিয়মিতভাবে এ তালিকা হালনাগাদ করছে। সর্বশেষ করেছে গত ২৩ আগস্ট। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ তালিকায় নতুন করে যোগ হয়েছে ৭টি গন্তব্য। এগুলো হচ্ছে কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, লিথুনিয়া, অ্যাজোরেস ও লিচটেসস্টাইন। এর মানে এসব দেশে যদি ব্রিটিশ নাগরিকরা ভ্রমণে যায় তাহলে তাদের আর বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে না। এমনকি থাইল্যান্ড ও মন্টেনেগারো ব্রিটেনের ভ্রমণ তালিকায় নিষিদ্ধ ছিল তাও ফের চালু হচ্ছে।
ডেনমার্ক আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নিচ্ছে। ডেনমার্ক এমনিতেই বিশে^র ১০ শীর্ষ টিকাদানকারী দেশের একটি। ফলে এদেশে মহামারি মোকাবেলায় সফলতা এসেছে খুব ভালই। এক বিবৃতিতে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাগনাস হেউনিক বলেছেন যদিও ভ্রমণকারীদের জন্যে শিথিল হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি নিষেধ তবে প্রয়োজন মনে করলে দ্রুত তা কার্যকর করতে সরকার কখনো পিছপা হবে না।
হাওয়াইয়ের গভর্নর ডেভিড ইগ পর্যটকদের দ্বীপটি থেকে একটু দূরেই থাকতে বলেছেন। কারণ গত সপ্তাহে দ্বীপরাষ্ট্রটিতে ফের নতুন করে ৫ হাজার মানুষ কোভিডে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এপরও ভ্রমণকারীদের ওপর নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করছে না হাওয়াই কর্তৃপক্ষ। গভর্নর ডেভিড ইগ বলেন আমরা জানি দ্বীপগুলোতে
ভ্রমণের জন্য এটি একটি ভাল সময় নয়, কিন্তু ভ্রমণকারীরা এখন দ্বীপে আসতে পছন্দ করেন কারণ তারা যখন ফের ছুটি পাবেন তখন হয়ত ভ্রমণের সময় পাবেন না।
এদিকে ভেনিসে ফের ভ্রমণকারীরা ফের যেতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ফেরিগুলোতে সশস্ত্র গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিদিন ৮০ হাজার ভ্রমণকারী শহরটিতে বেড়াতে যাচ্ছেন। শহরটির বাসিন্দা ৫০ হাজার।
সিএনএন প্রতিবেদক জুলিয়া বাকলে তার প্রতিবেদনে বলছেন, ভ্রমণকারীদের নিয়ন্ত্রণে গার্ড মোতায়েন ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। এর পাশাপাশি ইউএস ফেডারেল অথোরিটি অতিরিক্ত বিমান যাত্রীর চাপ ভ্রমণের নিরাপত্তাকে বিঘিœত করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে।
ব্যাপকভাবে বিমান চলাচল বৃদ্ধি যে শুধু ফ্লাইন এ্যাটেনডেন্টদের সমস্যায় ফেলেছে তা নয় তা বৈমাকিদেরও বিমান নিরাপদে চালানোর ক্ষেত্রে বিঘœ সৃষ্টি করছে। তবে বিশে^র সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমান বন্দর হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউরোপের আমস্টারডাম আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর। এরপরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দুবাই বিমান বন্দর।
ব্রিটেনের ভ্রমণ তথ্য প্রোভাইডার ওএজি এ তথ্য দিয়েছে। ওদিকে এয়ার কানাডা তার স্টাফদের কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে। এজন্য তাদের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ অক্টোবর।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রধান এয়ারলাইন্সগুলোর স্টাফদেরও ভ্যাকসিন নিতে বলা হয়েছে। এরই মাছে আইসল্যান্ডে গত মে মাস থেকে নতুন করে কেউ কোভিডে মারা যায়নি। আইসল্যান্ড টিকা দান কর্মসূচিতে মাল্টা, সিঙ্গাপুর ও আমিরাতের পর অবস্থান করছে।
গত বছরের পর এবছর আইসল্যান্ডে মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে কম। এদিকে ডিজনি ক্রুজ লাই বলেছে তাদের যাত্রীদের জাহাজে ওঠার আগে অবশ্যই টিকা দিতে হবে। এমনকি তার বয়স যদি ১২ বছর হয় তবুও।