৭ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচক ঊর্ধ্বমুখী
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার আগের দিনের ধারাবাহিকতায় গতকাল সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবারও ব্যাপক সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই নিয়ে টানা ৭ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচক উর্ধ্বমুখী অব্যাহত রয়েছে। গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর চার রেকর্ড হয়েছে। আর টানা ৬ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে রেকর্ড গড়ছে আর ভাঙছে। টানা উত্থানের কারণে শেয়ারবাজার ৭ হাজার সূচক অতিক্রম করে এখন ৭ হাজার ২০০ পয়েন্টের কাছাকাছি। প্রতিদিনই নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে দেশের শেয়ারবাজার। গতকাল বড় উত্থানের মাধ্যমে সূচকটি সাত হাজার দুইশত পয়েন্ট ছুঁই ছুঁই করছে।
সবকটি মূল্য সূচক রেকর্ড অবস্থানে উঠে আসার পাশাপাশি বাজার মূলধনও ইতিহাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে। ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৮২ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকায়। এর আগে কখনো ডিএসইর বাজার মূলধন পাঁচ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারেনি।
এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরাও বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, বর্তমান শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত- উল- ইসলাম দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে গতি ফিরে এসেছে শেয়ারবাজারের। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে। এই নিয়ে ৬ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে রেকর্ড হয়েছে। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
আগের কার্যদিবসের মতো গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় মূল্যসূচকের বড় উত্থানের মাধ্যমে। লেনদেন শুরু হতেই প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৪০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
মধ্যে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা কমলেও শেষ দিকে বড় মূলধনের কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় মূল্যসূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
তবে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে তার থেকে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৫২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬টির। আর ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে সাত হাজার ১৯৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২৯ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৬১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৫৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তিনটি সূচকই এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৫৫৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় দুই হাজার ৮৬৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩১০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৯৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর ৮৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৭৯ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেপিসিএল।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো, বেক্সিমকো ফার্মা, সাইফ পাওয়ার টেক, বিডি ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস এবং আলিফ মেনুফেকচারিং।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৯৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩২৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৩টির এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সম্পাদনা : শোভন দত্ত