ভারতে প্রযুক্তি খাতের নতুন চমক সফটওয়্যার-অ্যাজ-এ-সার্ভিস ২০৩০ সালের মধ্যে এসএএস’র বাজার হবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার
সাজিদ হাসান : বর্তমানে বৈশ্বিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইটি) খাতে অন্যতম পরাশক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে ভারত। বিগত বিশ বছরেরও বেশি সময়ের প্রক্রিয়ায় ভারত আজ এই জায়গায় পৌঁছেছে যা ভারতে নজিরবিহীন সম্পদ ও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে। সিএনএন
ভারতে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম আইটি ডেভেলপার কমিউনিটি এবং তাদের অনেকেই আন্তর্জাতিকভাবে নামকরা সব আইটি কিংবা সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করে। এসব সাফল্যের পর জুম ও স্ল্যাকের মতো নতুন প্রজন্মের সফটওয়্যারের মাধ্যমে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ নতুন করে দিতে যাচ্ছে বিশাল এক চমক।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল অবকাঠামো ও অনলাইন ভিত্তিক বাণিজ্যে ব্যাপক বিনিয়োগ ঘটেছে। কেএমপিজে এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘরে বসে কাজ করার ফলে গত বছরে প্রতি সপ্তাহে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রযুক্তি খাতে অতিরিক্ত ১৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এ পরিস্থিতে ভার্চুয়াল অফিস সিস্টেমের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে সফটওয়্যার-অ্যাজ-এ-সার্ভিস (এসএএস) সেবা।
এসএএস হলো এমন একটি সেবা প্রদান প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ক্রেতাদেরকে বা সেবা গ্রহণকারীদেরকে মানুষের পরিবর্তে সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয়। সারা বিশ্বেই এই বিষয়টি ব্যাপক সাফল্য ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ভারতেও গড়ে উঠছে এসএএস সিস্টেম নির্ভর প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া এসএএস তৈরি করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বর্তমানে মাসিক হিসেবে আয় করছে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। ম্যাককিনজি অ্যান্ড কো এবং এসএএসবুমি নামক কনসাল্টিং ফার্মের যৌথ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের এসএএস ইন্ডাস্ট্রির মূল্য হতে পারে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এর মাধ্যমে প্রায় ৫ লাখ মানুষের জন্য সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থান। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, বর্তমানে ভারতে ১০টি এসএএস কোম্পানী আছে যাদের মোট আয়ের পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
ভারতের সব থেকে সফল এসএএস প্রতিষ্ঠান হলো, ফ্রেশওয়ার্কস। দশ বছর আগে দক্ষিণ ভারতের চেন্নাইতে গড়ে ওঠা এই এসএএস কোম্পানিটির এখন বিশ্বজুড়ে ৫০ হাজারের বেশি গ্রাহক আছে এবং ২০১৯ সালে কোম্পানিটির বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছিলো ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ফ্রেশওয়ার্কস-এর সিইও গিরিশ মাথ্রুবুথাম বলেন, ৯০-এর দশক থেকে ভারতে যেসব আইটি কোম্পানি গড়ে উঠেছে সেগুলোর জন্য এসএএস সিস্টেম হতে পারে একটি বিশাল সুযোগ। এসএএস খাতে ভারত নতুন হলেও এদেশের বিশাল সংখ্যক মানুষের ইংরেজীতে কথা বলা এবং এখানকার মানুষের শ্রমের দাম তুলনামূলকভাবে সস্তা হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক বিনিয়োগ করতে পারেন এই কোম্পানীগুলোতে। ফ্রেশওয়ার্কসের সাফল্য দেখে বর্তমানে জেনোটির মতো আরো বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এই খাতে বিনিয়োগ করছে। জেনোটি স্পা এবং বিউটি সেলুনের জন্য সফটওয়্যার বানিয়ে থাকে।
ভারতের দশটি এসএএস কোম্পানি সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে এবং তাদের এই সাফল্য দেখে সারা বিশ্ব থেকেও বিনিয়োগকারীরা এই খাতে বিনিয়োগ করছে এবং বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করছে। এসএএসবুমি-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীরা ভারতের এসএএস কোম্পানিগুলোতে ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছিলো যা ছিলো ২০১৮ বা ২০১৯ এর তুলনায় চার গুণ বেশি। সম্পাদনা : রাশিদ