সেপ্টেম্বরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ৩৮ শতাংশ
অর্থনীতি ডেস্ক : চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসে সকল খাত থেকে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ হাজার ১৬৫ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার। যা গত অর্থবছরের একই মাসে রপ্তানি আয় ছিল ৩ হাজার ১৮ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৯ শতাংশ।
২০২১ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে মোট রপ্তানির আয় হয়েছে ৫ হাজার ১৬৪ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১১.৩৭ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রতিবেদনমতে, এ তিন মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা ৮ হাজার ১২৬ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার আয় করে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের তিন মাসে নিটওয়্যার রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এসময় রপ্তানি হয়েছে ৫ হাজার ১৬৪ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হযেছে ১৬ শতাংশ। তিন মাসে ওভেন পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৮৯৫ মিলিয়ন ডলার, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের প্রবৃদ্ধিও ছিল ইতিবাচক, ২০ শতাংশেরও বেশি।
গতবছরের নেতিবাচক রপ্তানি প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এখন করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য চালু হয়েছে। পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। এছাড়া ভারত, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামে পোশাকের ক্রেতা কিছুটা বাংলাদেশমুখী হতে থাকায় রপ্তানি ইতিবাচক দিকে যাচ্ছে বলে মনে করেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।
ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেড এর তরুণ উদ্যোক্তা ও বিজিএমইএ পরিচালক রুবেল জানান, গতবছর মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তৈরি পোশাক খাত। এখন ওই ক্ষত কাটিয়ে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হয়েছে, দোকানপাট খুলেছে, ফলে পোশাকের চাহিদা বাড়ায় নতুন অর্ডারও আসছে। এ কারণে রপ্তানি আয় বেড়েছে। এছাড়া সুতা, পণ্যের কাঁচামালের দাম ও উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণেও রপ্তানি আয় বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে এ আয় স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় খুব বেশি নয় বলে দাবি করেন তৈরি পোশাকের এ উদ্যোক্তা।
তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতিতে ২০২০ সালে আমাদের পোশাক রপ্তানিতে ধস নামে। ওই বছর আমরা ৩৪ বিলিয়ন পোশাক পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য নিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের রপ্তানি হয়েছে মাত্র ২৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। যা ছিল স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কম। তাই গত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এ বছর আয় বেশি দেখাবে। তবে ২০১৯ সালের সঙ্গে তুলনা করলে আয় খুব বেশি হবে না।
আগামীতে রপ্তানির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে- এমন প্রত্যাশা জানিয়ে বিজিএমইএ-র এই নেতা জানান, এবার ৩৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন পোশাক রপ্তানির লক্ষ্য ঠিক করা হচ্ছে। আমাদের নতুন নতুন অর্ডার আসছে। আশা করছি এ লক্ষ পূরণ করতে পারব। হিসাব করলে ইতোমধ্যে আমরা ভিয়েতনামকে ছাড়িয়ে গেছি। বছর শেষে রপ্তানি আয় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হবে বলে জানান তিনি। ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর শেষে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়ে ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ডলার হয়েছে। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানির আয় বেড়েছে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। তিন মাসে এ খাতে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৭ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয়েও প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময় চামড়াজাত খাত থেকে রপ্তানি আয় এসেছে ২৭ কোটি ১৩ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি। সূত্র: টিবিএস বাংলা অনলাইন, ঢাকা পোস্ট। সম্পাদনা : শরীফ শাওন