৯ হাজার কোটি টাকার বন্ড আনছে ডিএনসিসি
অর্থনীতি ডেস্ক : মিউনিসিপ্যাল বন্ড বা মুনি বন্ড হচ্ছে এক ধরনের সিকিউরিটি ফান্ড, যা কেবল পৌরসভা, শহর এবং রাষ্ট্রের উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য নির্ধারণ করা হয়। এটা এক ধরনের ঋণের মতো, যা কোনো দেশের জনগণ সেই দেশের স্থানীয় সরকারকে দিয়ে থাকেন। বিনিময়ে পান মুনাফা।
মিউনিসিপ্যাল বন্ড আনছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। দুটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এই বন্ডের মাধ্যমে বাজার থেকে ৯ হাজার কোটি টাকা তুলে নিতে চান উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম। এই টাকায় দুটি বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করতে চায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, বন্ডের ২০০০ কোটি টাকায় গুলশান-২ ডিএনসিসি মার্কেটের সোয়া ৩ একর জমির ওপর একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা হবে।
এই কাজ শেষ হলে কারওয়ান বাজারের ২৪ বিঘা জমির ওপর হবে একটি অত্যাধুনিক বিজনেস হাব। এই জমিতে বর্তমানে ডিএনসিসির তিনটি মার্কেট রয়েছে।
মেয়র জানান, কারওয়ান বাজারের ভবনটি হবে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ভবন। ভবনটি কেমন হবে তা ইতিমধ্যে ঠিক করা হয়েছে। এর ত্রিমাত্রিক নকশা তৈরির কাজও শেষ দিকে। এখন চলছে প্রকৌশলগত নকশা চূড়ান্তের কাজ। এটা শেষ হলে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। সেখানে অনুমোদন হলেই বাজারে বন্ড ছেড়ে টাকা তোলা হবে।
আতিক বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ ঠিক রেখে এখানে বানানো হবে মনোরম বাণিজ্যিক কেন্দ্র। এখানে মিডিয়া কেন্দ্র ছাড়াও থাকবে বিশাল পার্কিং ব্যবস্থা। থাকবে সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্র, অত্যাধুনিক অপেরা হাউস, বিদেশিদের জন্য রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন, সুবিশাল কনভেনশনাল সেন্টার, নাগরিক মিলনায়তনসহ নানা স্থাপনা।
গুলশানের কাজ ২০২৩ সালে শেষ করে কারওয়ান বাজারের কাজ শুরু করার ইচ্ছা ডিএনসিসির। মেয়র বলেন, আমার বর্তমান মেয়াদেই কারওয়ান বাজারের কাজ শুরু করতে চাই।
ইতিমধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন পক্ষ থেকে এই বন্ডের বিষয়ে বৈঠক হয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সঙ্গে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করে বন্ডের আগ্রহের কথা জানান মেয়র আতিক। বৈঠকে মেয়র ছাড়াও পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব ও সিটি করপোরেশনের অন্য শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদসহ অন্য শীর্ষ কর্মকর্তারাও বৈঠকে অংশ নেন।
অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ জানান, মেয়র বন্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে অবকাঠামো উন্নয়নে আগ্রহ দেখালে বিএসইসিএর পক্ষ থেকেও সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়।
তিনি বলেন, আমরা ডিএনসিসি মেয়রকে গ্রিন বন্ড ইস্যুর পরামর্শ দিয়েছি। মেয়র আমাদের জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়েরও বন্ড ইস্যুতে সম্মতি রয়েছে।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, আলোচ্য দুই প্রকল্প ছাড়াও ভবিষ্যতে রাজধানী ঢাকার রাস্তা, ভবনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে মিউনিসিপ্যাল বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের কথা ভাবছেন মেয়র আতিক। সূত্র : নিউজবাংলা