ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগামিং কন্টেস্ট-এ পশ্চিম এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন বুয়েট
শরীফ শাওন : বিশ্বের ১১৬ দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইসিপিসি-২০২১ প্রতিযোগিতায় ১১৫৭ পয়েন্ট নিয়ে স্কোর-৭ করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। ৭৭২ পয়েন্ট নিয়ে স্কোর-৬ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আইসিপিসি র্যাংকিংয়ে বুয়েটের অবস্থান ২৮তম এবং ঢাবির অবস্থান ৩৩তম।
বৈশ্বিক এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পশ্চিম এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হয়েছে বুয়েট। ‘বুয়েট হেলবেন্ট’ নামে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগী দলে ছিলেন শিক্ষার্থী আর্জিয়া পাল, আশিকুল ইসলাম এবং প্রিতম কু-। কোচ হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোহেল রহমান।
বৃহস্পতিবার বুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম আশিকুর রহামন জানান, করোনার কারণে এবারের আইসিপিসি প্রতিযোগিতা পিছিয়ে ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমবারের মতো মস্কোতে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
আশিকুর রহমান বলেন, প্রতিবছর বৈশ্বিকভাবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের অভ্যান্তরীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক দল অংশ নিতে পারে। সেখান থেকে নির্বাচিতদের নিয়ে আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা হয়। তবে সেক্ষেত্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি দল অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নিয়ে আইসিপিসি চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিটি দলে তিনজন করে শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। দলগতভাবে তারা বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে পয়েন্ট অর্জন করেন।
আইসিপিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, এটি এমন এক প্রতিযোগিতা যেখানে বছরের শ্রেষ্ঠ মেধার প্রতিযোগিতা হয়। এটি ¯œাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য আসল অলেম্পিক গেমস্। যেখানে দলগতভাবে সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন দ্বারা দ্রুততার সঙ্গে সমস্যা সমাধানের প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। প্রতিটি অংশগ্রহণকারী দলকে একটি কম্পিউটারের দশটি বা তার বেশি খুব জটিল সমস্যা দেওয়া হয়। সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের ৫ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়।
প্রতিটি প্রতিযোগিতায় বাস্তব জীবনের ভিত্তিতে সমস্যাগুলো দেওয়া হয়ে থাকে। আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনাল সমস্যা সেটে সাবওয়ে শিডিউল, এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের মডেল, সার্কিট বিশ্লেষণ, ফেন্স প্লেসমেন্ট কমানো, রোবটের মুভমেন্ট ট্র্যাক করা, রেস কোর্স এর ম্যাপ, এয়ারপোর্টের লাগেজ সংগ্রহের অনুকরণ, তেল মজুদ অনুমান ইত্যাদি সমস্যা দেওয়া হয়। ১৯৭০ সালে টেক্সাসের এ এন্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। দ্রুততার সঙ্গে তা ইউএস এবং কানাডায় জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৭৭ সাল থেকে তা বাৎসরিকভাবে পালিত হয়। ১৯৮৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়গুলের মধ্যে তা বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। বর্তমানে প্রতিবছর বিশ্বের ১১১ দেশের ৩ হাজারের বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।