বিশ^ব্যাপী খাদ্যমূল্যস্ফীতিতে রেকর্ড ভোজ্য তেল, চিনি ও গমের চাহিদা বৃদ্ধি
রাশিদ রিয়াজ : গত সেপ্টেম্বরে টানা দ্বিতীয় মাসের মতো বিশে^ এসব পণ্যের রেকর্ড মূল্য বৃদ্ধির পর তা গত ১০ বছরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের ফুড এন্ড এগ্রিকারচার অর্গানাইজেশন ফাও বলছে আন্তর্জাতিক বাজারে যেসব খাদ্যপণ্য বিক্রি হয় তার মূল্যসূচক গত মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩০ পয়েন্ট।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের পর এধরনের খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি সর্বোচ্চ। আর ফি বছর খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৩২.৮ শতাংশ। চাষাবাদ সংকট, চাহিদা বৃদ্ধির ফলে বিশ^বাজারে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আরটি
গত সেপ্টেম্বরে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে ১.৭ শতাংশ। আর গত বছরের তুলনায় এ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৬০ শতাংশ।
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক সংকটের কারণে পামওয়েলের দাম বাড়ায় অন্যান্য ভোজ্য তেলের দামও বেড়েছে। গম ও দানাদার শস্যের দাম বেড়েছে ২ শতাংশ। অথচ এ বছর রেকর্ড পরিমান গম ও এধরনের শস্যের উৎপাদন হয়েছে যা পরিমানে ২.৮ বিলিয়ন টন।
ব্রাজিলে খারাপ আবহাওয়ার কারণে চিনির উৎপাদন মার খেয়েছে। ব্রাজিল বিশে^র সবচেয়ে বড় চিনি রফতানিকারক দেশ।
আন্তর্জাতিক বাজারে ০.৫ শতাংশ দাম বেড়েছে চিনির। ভারত ও থাইল্যান্ডে চিনির উৎপাদন মোটামুটি উৎসাহব্যঞ্জক। গত সেপ্টেম্বরে ডেইরি পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে গুড়া দুধ ও মাখনের দাম বেড়েছে বেশি। গত ১২ মাস ধরে মাংশের দাম বাড়ছে। গরু ও ভেড়ার মাংসের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। তবে পলট্রি বা মুরগির দাম অতটা বৃদ্ধি পায়নি। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে মুরগি ও ডিমের সরবরাহ বেড়েছে। শুকরের মাংসের দামও কমেছে। চীন ও ইউরোপ থেকে আমদানির চাহিদাও কমেছে।
আরেক রিপোর্টে বলা হয়, এশিয়ার দেশগুলোতে খাদ্য খরচ ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে এসব দেশকে খাদ্য আমদানি বাবদ ব্যয় করতে হবে ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। আর বাড়তি চাহিদা মোকাবেলায় কৃষি খাতে দেড় ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে বলে জানিয়েছে ফাও। খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধির আরেক কারণ হবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। পিডব্লিউসি, র্যাবো ব্যাংক ও টেমাসেক’এর যৌথ এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে ২০৩০ সাল নাগাদ এশিয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে সাড়ে চার বিলিয়ন। একই সঙ্গে তুরস্ক ও ইউরোপের দেশগুলোতে রাশিয়ার খাদ্য রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোক্তাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তন খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধির আরেক কারণ। সিএনবিসিকে টেমাসেক বলেন স্বাস্থ্য উন্নত হয় এমন ও নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা অনলাইনেও বাড়ছে। টেকসই হয় এমন খাদ্য চাচ্ছে ক্রেতারা। আগামী এক দশকের মধ্যে এশিয়া এসব কারণে বিশে^র বৃহত্তম খাদ্য ও পানীয়ের বাজার হয়ে উঠতে যাচ্ছে। ভারত ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ইতিমধ্যে খাদ্যের দিকে নজর দিতে শুরু করেছে। চীন এ বাজারের অনেকটাই দখলে রেখেছে।