মধ্যপ্রাচ্যে গেল বাংলাদেশের বাঁশের বেড়া
অর্থনীতি ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির ঝুড়িতে সম্প্রতি যোগ হয়েছে দু’টি পণ্য। বাঁশের বেড়া আর মাটির সানকি। চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর এসব পণ্যের বড় একটি চালান গেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েতে।
নাফস ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার তনয় বড়ুয়া বলেন, ‘বাঁশের তৈরি বেড়া দিয়ে মরুভূমিতে ঘর তৈরি করেন কুয়েতিরা। কুয়েতের মরুভূমিতে বাঁশ ও ছনের ঘর তৈরি করে পর্যটকদের আকৃষ্ট করেন তারা। আর খাবার পরিবেশনের জন্য দেওয়া হয় মাটির সানকি।’
এটি রপ্তানি করেছে চট্টগ্রামের নাফস ইন্টারন্যাশনাল। আর বাংলাদেশ থেকে পণ্যগুলো নিয়েছে কুয়েতের কল্লোল জেনারেল ট্রেডিং।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পাঠানো এই পণ্যের কনটেইনারের ওজন ছিল ১৫ হাজার ৪০০ কেজি। ৪৪৫টি প্যাকেটে পাঠানো হয়েছে এসব পণ্য।
চট্টগ্রাম উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক নাছির উদ্দিন জানান, কুয়েতের এক আমদানিকারক বাংলাদেশ থেকে বাঁশের তৈরি বেড়া-চাটাই, পাটি ও মাটির তৈরি সানকি নিয়ে গেছেন।
রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান নাফস ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার তনয় বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা বাঁশের বেড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করেছি। এ ছাড়া আমাদের কিছু সরবরাহকারী আছেন, যারা আমাদের এগুলো তৈরি করে দেন। বাঁশের তৈরি বেড়া দিয়ে মরুভূমিতে ঘর তৈরি করেন কুয়েতিরা।
‘কুয়েতের মরুভূমিতে বাঁশ ও ছনের ঘর তৈরি করে পর্যটকদের আকৃষ্ট করেন তারা। আর খাবার পরিবেশনের জন্য দেওয়া হয় মাটির সানকি। শুধু বাঁশের তৈরি বেড়া নয়, তার সঙ্গে পাহাড়ি ছনও পাঠাই কুয়েতে। এসব বেড়া মুলি বাঁশের তৈরি।’
চট্টগ্রাম উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক নাছির উদ্দিন বলেন, ‘বাঁশের তৈরি নিত্যব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিসপত্র এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে এর চাহিদা বেশি। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাঁশ-বেতের পণ্য পাঠাতে পারলে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব।
‘আমাদের দেশে প্রচুর বাঁশ ও বেত উৎপাদন হয়। প্রয়োজনে এর চাষ আরও বাড়ানো যায়। তা ছাড়া এসব পণ্য চাইলে নারীরাও তৈরি করতে পারে। এতে নারীদের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।’
চট্টগ্রাম উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের রোগতত্ত্ববিদ সৈয়দ মুনিরুল হক বলেন, ‘কোনো ধরনের পোকামাকড়জনিত রোগ না থাকে, সেই ধরনের বাঁশ দিয়ে পণ্য তৈরি করতে হয়। রোগবালাই থাকলে সেগুলো বিদেশের কোনো বন্দর দিয়েই ছাড় দেবে না।
‘তাই রোগমুক্ত বাঁশ নির্বাচন করেই এসব শৌখিন ও ব্যবহার্য পণ্য তৈরি করতে হবে। যেকোনো দেশের ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই এ পণ্য বিদেশে পাঠানো যাবে।’
চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘বিদেশে এসব পণ্যের প্রচার দরকার। এ জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।
‘মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে পরিবেশবান্ধব এসব ঘর ও পণ্য জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর। এ জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নেয়া ছাড়াও সারা বিশ্বে এর উপযোগিতা তুলে ধরতে হবে।’ সূত্র : নিউজবাংলা