দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি খাতে ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার চালু
নিজস্ব প্রতিবেদক : বেসরকারি খাতের অন্যতম সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং স্ট্রেংথেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স যৌথভাবে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে প্রথমবারের মত বাংলাদেশে দূর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বেসরকারীখাতের অংশগ্রহণে প্রাইভেট সেক্টর ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার স্থাপন করেছে। মঙ্গলবার ডিসিসিআইতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন, যেখানে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সুপার প্রজেক্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং নগর অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর ভূমিকম্প সহনশীলতা জোরদার এবং সর্বস্তারের জনগণকে দূর্যোগ সহনশীল করে তোলার লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে বিভিন্ন অংশীজনদের মধ্যে পারষ্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দূর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে নিরাপদ নগরায়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি শিল্প ও বিনিয়োগ ঝুঁকিমুক্ত করা সম্ভব। দূর্যোগ মোকাবেলা ও ব্যবস্থাপনায় আমাদের গতানুগতিক চিন্তা ধরার পরিবর্তনের উপর তিনি জোরারোপ করেন, সেই সাথে সরকার গৃহীত এ ধরনের কার্যক্রমে আরও বেশি হারে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, দূর্যোগ মোকাবেলা ও ব্যবস্থাপনায় সরকারী এবং বেসরকারীখাতের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিসিসিআইতে স্থাপতি দেশের প্রথম বেসরকারি খাত ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টারটি দূর্যোগ মোকবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তিনি বেসরকারি খাত এ ধরনের উদ্যোগের সাথে আরও বেশি হারে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, চীনের কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় সরকার রাজধানীর তেজগাঁও অঞ্চলে ১ একর জমির উপর একটি ন্যাশনাল ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যেটি দেশে দূর্যোগ মোকাবেলায় পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে। সারাদেশে ইতোমধ্যে প্রায় ৪২ লাখ স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি প্রদানের মাধ্যমে দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুুত করা হয়েছে। এ কার্যক্রম ভবিষ্যতে চলমান থাকবে।
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণে এ ধরনের ইমাজেন্সি অপারেশন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ বেসরকারি খাতে নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়ার বার্তা বহন করেন। এ কার্যক্রম বেসরকারি খাতকে আরও বেশি হারে সম্পৃক্তকরণের উপর তিনি জোরারোপ করেন।
একশনএইড’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রমে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় অগ্রীম ফান্ড গঠনের জন্য বেসরকারি খাতের প্রতি আহ্বান জানান। দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রশিক্ষিত জনবলের একটি ডাটাবেইজ একান্ত অপরিহার্য বলে তিনি মত প্রকাশ করেন, পাশাপাশি গ্রামীণ পর্যায়ের বাণিজ্য সংগঠনসমূহকে দৃর্যোগ ব্যবস্থপনা কার্যক্রমে সম্পৃক্তকরণের উপর তিনি জোরারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে ডাইরেক্টর জেনারেল ফর ইউরোপীয়ান সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউমেনিটারিয়ান এইড অপারেশন্স (ইকো)-এর প্রধান ড্যানিয়ালা ডিওরসো এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ন্যাশনাল ডিরেক্টর সুরেশ বার্টলেট বক্তব্য প্রদান করেন। ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ঢাকা চেম্বারের সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেনসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।