শেয়ারবাজারে সূচক পতন অব্যাহত বীমা খাতের দর বাড়লেও ব্যাংক আর্থিক খাতের দর কমেছে
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবারও সূচকের নি¤œমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই নিয়ে দুই কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচক নি¤œমুখী অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল সূচক কমেছে একই সাথে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। এদিন বীমা খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়লেও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারে দাম কমেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের ৩২টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ১৪টির, বেড়েছে ৮টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১০টির। অপরদিকে আর্থিক খাতের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ২টির, কমেছে ১৯টির। একইভাবে প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের শেয়ারের দামও কমেছে। তাতে একদিন উত্থানের পর আবারও টানা দুদিন দরপতন হলো। তবে এই দরপতনের দিনেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের বীমা খাত।
এদিন বীমা খাতের ৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৫টির, কমেছে ১৪টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এতে বড় দরপতন থেকে রক্ষা পেয়েছে শেয়ারবাজর। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইতে ২৪৪ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩১.৫৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৩১৩.৯৮ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৭.৪০ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ সূচক ৫.৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে দুই হাজার ৭৪৯.৮৮ পয়েন্টে এবং এক হাজার ৫৯১.০৪ পয়েন্টে।
ডিএসইতে এক হাজার ৮৬৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৮৪৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ডিএসইতে ৩৭৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৯৩ টির বা ২৪.৪৮ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ২৪৪টির বা ৬৫.০৭ শতাংশের এবং ৩৮টির বা ১০.১৩ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৮.০৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৩৬০.৮৪ পয়েন্টে। সিএসইতে ৩০১ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৩টির দর বেড়েছে, কমেছে ২০৬টির আর ২২টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৬৩ কোটি ০৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
এদিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, শেয়ারবাজারে পরারপ দুই কার্যদিবস দরপতন হয়েছে এটাকে মূল্য সংশোধন হিসাবে দেখছেন। তারা মনে করেন, শেয়ারবাজারে টানা সূচক বাড়া বাজারের জন্য ভালো না আবার কমাও বাজারের জন্য ভালো না।
এবিষয়ে বিনিয়োগকারী এহতেশামুজ্জামান বলেন, অধিকাংশ ব্যাংক মুনাফা করেছে তারপরও ব্যাংকের শেয়ারের দর তুলনা মূলক ভাবে বাড়ছে না বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই হতাশাজনক। গত একবছরে আমরা সাধারন বিনিয়োগকারীরা দেখলাম ব্যাংকের ঘোষিত লভ্যাংশ অনেক আকর্ষণীয় এবং ব্যাংকের শেয়ার প্রতি ইপিএস অনেক ভাল, তার পর ব্যাংকের শেয়ারের দর সেই হারে বাড়ছে না। এহতেশামুজ্জামান আরও বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিৎ মন্দ অর্থাৎ দুর্বল মৌলভিত্তিক কোম্পানির শেয়ারের দাম যাতে না বাড়ে সেদিকে নজর রাখা। দুর্বল কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের কখনো ভালো লভ্যাংশ দেয় না। আরেক বিনিয়োগকারী আখতারুজ্জামান বলেন, অনেক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট আন্ডার ভ্যালুড নিচে রয়েছে, ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে। তার পরও দাম সেই ভাবে বাড়ছে না। এখান থেকে অনেক বাড়ার সুযোগ আছে। আশা করি সামনে মিউচ্যুায়াল ফান্ডের ইউটিরি দর বাড়বে।