কুমিল্লার বাগমারা বাজারে যুগ যুগ ধরে বসছে দুধের হাট
হ্যাপি আক্তার : কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার। কুমিল্লা-নোয়াখালী আ লিক মহাসড়ক সংলগ্ন এ বাজারে প্রতিদিন ভোরে গরুর দুধের হাট বসে। খামারিরা এ বাজারে প্রতিদিন সাড়ে ১২ হাজার লিটার দুধ বিক্রি করেন। বাসস, দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
খামারিরা জানায়, উপজেলার পেরুল উত্তর, দক্ষিণ, ভোলাইন উত্তর-দক্ষিণ, বাগমারাসহ পাঁচ ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার খামারি দুধেল গরু পালন করেন। তারা উৎপাদন করেন প্রায় ১২ হাজার লিটার দুধ। বড় খামারি অনেকে সরাসরি কুমিল্লা ও লাকসামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুধ বিক্রি করেন। মাঝারি ও ক্ষুদ্র খামারিরা বাগমারা বাজারে এনে পাইকারদের কাছে দুধ বিক্রি করেন। এখানে ১৫-২০ জন পাইকার দুধ সংগ্রহ করেন।
সাইকেল, রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা দিয়ে খামারিরা দুধ নিয়ে আসছেন। পাইকাররা দুধ কিনে ড্রামে ঢেলে রাখছেন। সহযোগীরা সেই ড্রাম পিকআপ ভ্যানে তুলছেন। খামারিরা দাম পেয়েছেন প্রতি লিটার ৫০ টাকা দরে। বেশি দুধ আসে লালমাই উপজেলার সিলোনিয়া, হাজতিয়া ও বাগমারা বাজারের আশপাশের গ্রাম থেকে।
আমুয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম এনেছেন ২৪ লিটার দুধ। নগদ দাম পেয়ে তিনি খুশি। কখনো বাজার পড়ে যায়, লিটার ৩০ টাকা হয়ে যায়। এতে তাদের লোকসান হয়। বাজার স্বাভাবিক রাখার আবেদন জানান তিনি।
বাজারের পাইকার দৌলতপুর গ্রামের মনির হোসেন বলেন, এখানে তিনি ৮ বছর ধরে দুধ সংগ্রহ করেন। আজ ৫০ টাকা দরে দুধ সংগ্রহ করেছেন। বিক্রি করবেন ৪৮ টাকা লিটার দরে। প্রতিদিন তিনি ১২০০ থেকে ১৩০০ লিটার দুধ সংগ্রহ করেন। এ বাজারে এরকম ১৫-১৬ জন পাইকার দুধ সংগ্রহ করেন।
সিলোনিয়া গ্রামের আজিজ ডেইরি ফার্মের পরিচালক ও জেলা ডেইরি মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল আজিজ বলেন, বাগমারা বাজারে কয়েক যুগ থেকে দুধের হাট বসে। আমরাও প্রথমে এখানে দুধ বিক্রি করতাম। এখন নিজেরা কুমিল্লায় সরাসরি সরবরাহ করি। বাকিটা দই ও মিষ্টি তৈরির কাজে লাগাই। এছাড়া কুমিল্লার সুয়াগাজী, চকবাজার, বুড়িচং বাজারে দুধের পাইকারি বাজার রয়েছে। শীতে ও ভারী বর্ষায় গরুর দুধের চাহিদা কম থাকে। সে সময় দাম কমে যায়। দুধের নতুন বাজার ও সংরক্ষণ করা গেলে খামারিরা উপকৃত হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্ন পয়েন্টে দুধ সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।