অভিমত জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের রান্নার গ্যাস এলপিজির মূল্যবৃদ্ধিতে অসহনীয় চাপে পড়েছেন ভোক্তারা
ভূঁইয়া আশিক রহমান: দেশে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজির মূল্য রবিবার প্রতি কেজিতে প্রায় ১৯ টাকা বাড়ানো হয়েছে, যা আগের দরের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি। প্রতি কেজি এলপিজির মূল্য আগের ৮৬ টাকা ৭ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১০৪ টাকা ৯২ পয়সা। এর ফলে ১২ কেজির একেকটি সিলিন্ডারের মূল্য আগের ১০৩৩ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১২৫৯ টাকা। গাড়িতে ব্যবহৃত এলপিজির দাম ৫০ টাকা ৫৬ পয়সা থেকে হচ্ছে ৫৮ টাকা ৬৮ পয়সা।
এ ব্যাপারে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম বলছেন, ব্যবসায়ীরা যেভাবে পরিবর্তন চেয়েছেন, এলপিজির মূল্যহারের পরিবর্তনে সেটাই নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে যেহেতু ঊর্ধ্বগতি আছে, তার সঙ্গে দর সমন্বয় করতে হবেই। কিন্তু যেসব কারণ দেখিয়ে গ্যাসের দর বৃদ্ধি করা হয়েছে, সেগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু সৌদি কন্ট্রাক্ট প্রাইসের (সিপির) বাইরে যেভাবে বাড়িয়ে ব্যবসায়ীদের ইপ্সিত বেশি বেশি মুনাফা লাভের প্রত্যাশা পূরণ করা হচ্ছে।
পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমতউল্লাহ বলেন, বলা হয়েছিলোÑএলপিজি আমদানি করলে প্রচুর সাশ্রয়ী হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এলপিজি আমদানি সাশ্রয়ী নয়। অনেক বেশি খরচ হয়। তিনি বলেন, মিয়ানমার বঙ্গোপসাগরের গভীর তলদেশে ১১ নম্বর ব্লক থেকে গত বছর থেকে গ্যাস তুলে ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। এগারো নম্বরের পাশেই ছিলো ১২ নম্বর ব্লক, যা বাংলাদেশের অংশ হিসেবে চিহ্নিত। ১২ নম্বর ব্লক থেকে গ্যাস তুললে অনেক কম দামে গ্যাস আমরা ব্যবহার করতে পারতাম। সম্ভাব্য ১০০ বছর আমাদের চাহিদা মিটতো বলে ধারণা।
চীন ও ভারত মিয়ানমারের কাছ থেকে সস্তায় গ্যাস কিনে নিচ্ছে ১১ ব্লক থেকে। ১২ নম্বর ব্লক থেকে গ্যাস না তুললে ১১ নম্বর ব্লকে চলে যাবে। পানির মতো টানলে টানলেও গ্যাস চলে যায়। নিজেদের গ্যাস না তুলে আমরা এলপিজি কিনছি। সরকারদলীয় ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়ার জন্য এলপিজি আমদানি করা হচ্ছে।
বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, বিশ^বাজারে যখন এলপিজির দাম বাড়ে, আমাদের এখানে সমন্বয় করা হয়। কিন্তু বিশ^বাজারে দাম কমলে দেশে কমানো হয় না। কেন? এটা একধরনের স্বেচ্ছাচারিতা। একদিকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাসীনরা একধরনের স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠা করে রাখছে, তাদের সহযোগী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারিতা চালাচ্ছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বেচ্ছাচারিতা চলছে।