পাটের সোনালি দিন ফিরতে বাধা রপ্তানী সংকট
অর্থনীতি ডেস্ক : ভারতের বাজারে পাটপণ্যের অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক সমস্যার সমাধান মিলছে না। ২০১৭ সালে দেশটির আরোপ করা এ সিদ্ধান্ত ঠেকাতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বাণিজ্যিক কূটনীতি চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মত ব্যবসায়ীদের।
কোনো দেশের বিরুদ্ধে ৩ বছরের বেশি অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা না গেলেও ভারতে এই অন্যায় সিদ্ধান্তের মেয়াদ ৪ বছর পার হয়ে গেছে। আর পাট মন্ত্রণালয় দেখছি, দেখবো, চেষ্টা চলছে, এসব বলে বার বার দায় এড়িয়ে যাচ্ছে।
উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে ভারতের বাজারে পাটজাত পণ্য রপ্তানি করছে বাংলাদেশ এ অভিযোগে ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে ভারত। বাংলাদেশের পাটজাত পণ্য বিশেষ করে বস্তা বা পাটের ব্যাগের বড় বাজার ছিল প্রতিবেশি এ দেশটি। রপ্তানিতে এ সংকটের ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সমাধান হয়নি এখনও।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, অ্যান্টি ডাম্পিংয়ের এ অন্যায় সুযোগের মেয়াদ বাড়াতে আবারও তৎপরতা শুরু করেছে প্রতিবেশি দেশটি। বাংলাদেশি রপ্তানিকারক ও মিল মালিকদের কাছে আবারও চাওয়া হচ্ছে সংবেদনশীল তথ্য।
বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ মজুমদার বলেন, কি কারণে আমরা ১০০ ডলারের জিনিস ৮০ ডলারে বিক্রি করব? নেপালের সঙ্গে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব হলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী পারবেন না কেন? প্রধানমন্ত্রীকে এ সম্পর্কিত তথ্য ঠিক মতো দেয়া হয়নি।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অ্যান্টি ডাম্পিং ইস্যুটি নিষ্পত্তিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডাব্লিউটিওতে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও তা করেনি বাংলাদেশ সরকার। বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে প্রশাসন।
বাংলাদেশ জুট ডাইভারসিফাইড প্রোডাক্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক রাশেদুল করীম মুন্না বলেন, এই বিষয়টিতে আমরা কোন শক্ত ভূমিকা দেখতে পাইনি। যৌক্তিক এবং ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য আমাদের উচিত ছিল ডব্লিউটিও সেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা। মন্ত্রণালয় এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আমরা আশা করি। সোনালি আশের সোনালি দিন ফেরাতে নানা প্রচারণা থাকলেও রপ্তানি বাধা দূর করতে কার্যত কোনো পদক্ষেপই নেয়নি পাট মন্ত্রণালয়।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নান জানান, শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টেরিফ কমিশনের সঙ্গেও আলোচন করছে। এটা এখন আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ- চার বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতের বাজারে পাটপণ্য রপ্তানির সংকট সমাধানে সরকারের এক দপ্তর আরেক দপ্তরের ওপর কেবল দায়ই চাপিয়েছে। সূত্র : ডিবিসি টিভি অনলাইন