আমিরুল ইসলাম : টানা ছয়দিনের পতনে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচকটি কমেছে ২৭১ পয়েন্ট। এর মধ্যে গত দুই দিনে কমেছে প্রায় ১৫০ পয়েন্ট। লেনদেন নেমেছে তিন মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে। ছয়দিনে ঢাকার বাজারে সূচক কমেছে পৌনে চার শতাংশ। একটানা পতনে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শেয়ারবাজারে বড় ধরনের কোনো বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখছেন কিনা জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, শেয়ার বাজারে টানা পতন হতেই পারে। টানা পতনের পর আবার ওঠবে। এটা মার্কেটের নরমাল বিহেভিয়ার। অনেকগুলো শেয়ারের দাম বেড়েছিলো, এগুলোর মাধ্যমে প্রফিট নিয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো নিজেরাও অ্যাডজাস্ট করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক একটা চাপের মধ্যে রেখেছিলো তাদের।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, শেয়ারবাজারে বড় ধরনের বিপর্যের কোনো শঙ্কা নেই। ডিএসইএক্স সূচকটি ছিলো ৪ হাজার পয়েন্টে, এটা এখনো ৭ হাজারে পয়েন্টের ওপরে আছে। এখানে কোনো বিপদ নেই। যারা যারা লাভ করে তাদের লোকসান তো যেতেই পারে। এমনিতে কোনো আতঙ্ক নেই। অনেক বিনিয়োগকারীরা জুয়া খেলে, জুয়া খেলে তারা লাভ করতে না পারলেই আতঙ্ক। তারা আসলে প্রকৃত বিনিয়োগকারী নন, তারা ডে ট্রেডার। টাকা হারানো ও টাকা গেইন করা শেয়ারবাজারের ধর্ম। এখানে ঝুঁকি তো আছেই। সেল্ফ প্রেসারের কারণেই সূচক কমেছে। বছরের থার্ড কোয়ার্টারের রিপোর্ট আসছে। আইন অনুযায়ী এ মাসের শেষের মধ্যেই আসতে হবে। এর জন্য অপেক্ষা করছে কোন কোম্পানি বেশি দেখায়, কম দেখায়। এজন্য চাহিদার দিক থেকে একটু স্লো যাচ্ছে।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ বলেন, শেয়ারবাজার ইতোমধ্যেই বিপর্যয়ে আছে। এখানে বাবল সৃষ্টি করা হয়েছে। এই বাবল সৃষ্টি করা হলেই বিপর্যয় হয়। বরং যতো তাড়াতাড়ি শেয়ারের দাম কমিয়ে দেবে বিপর্যয় ততো কম হবে। বাজে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে মানুষকে প্রলুব্ধ করার পর দাম কমে গেলেই বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শেয়ারবাজার মাঝে মাঝে কারেকশন হয়। এটা অত্যন্ত ভালো লক্ষণ। দাম যদি অনবরত ওঠে তারপর পড়তে শুরু করে বা উত্থান-পতন অতিমাত্রায় অস্বাভাবিকভাবে হলেই বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে কেউ যেন ফটকাবাজারী না করতে পারে সেজন্য রেগুলেটরি কমিশন ভালো ভালো আইন করেছে। কিন্তু সেই আইনের প্রয়োগ পক্ষপাতিত্ব রয়েছে বা অমনোযোগিতা রয়েছে। শেয়ারবাজার স্বাভাবিকভাবে চলতে দিতে হবে। নিরপেক্ষভাবে আইনের সঠিক প্রয়োগ থাকতে হবে। কোথা থেকে বিনিয়োগের অর্থ আসছে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বা কোনো কোম্পানি হঠাৎ করে শেয়ার ক্রয় করছে কিনা খেয়াল রাখতে হবে।