সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ঢাবি ও শাহবাগে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ পুড়ছে বাংলাদেশ, দেখতে কি পাও?
অর্থনীতি ডেস্ক : সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ ও দোষীদের গ্রেপ্তার দাবিতে প্রতিবাদী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি শাহবাগে এমন ঘটনার প্রতিবাদ করেছে কয়েকটি ছাত্র সংগঠন, শিল্পী সমাজ ও সচেতন মানুষরা। পুড়ছে বাংলাদেশ, দেখতে কি পাও? এমন প্রশ্ন সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ।
অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিবাদী পথনাটকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর চালানো সহিংসতার চিত্র ফুটিয়ে তোলেন শিক্ষার্থীরা। সাম্যের গান গেয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আহ্বান তাদের।
তারা বলেন, একটা বিশেষ গোষ্ঠী সোনার বাংলায় অরাজকতা করছে। আমরা চাচ্ছি আমাদের যার যার স্থান থেকে আমাদের ৭১ এর চেতনাকে ফিরিয়ে আনতে। আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি সাম্প্রদায়িকতার।
এসময় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। এখানে সবাই নিজ নিজ ধর্ম নিজেদের মতো করে পালন করে, কিন্তু উৎসব সবাই ভাগ করে নেয়। বাংলাদেশের শারদীয় দুর্গোৎসব সারা পৃথিবীতে একটি উদাহরণ। এসময় সব ধর্মের সব শ্রেণী-পেশার মানুষ এই উৎসবে অন্তর্ভুক্ত হয়, অংশগ্রহণ করে। তবে মাঝে মধ্যেই এ ধরনের ধিকৃত ঘটনা আমাদের দেখতে হয়। এটা এই জাতির জন্য খুবই দুর্ভাগ্য এবং দুঃখজনক।’
‘বিচ্ছিন্নভাবে হলেও দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান ঘটেছে, তা নিন্দনীয়, যা কোনোক্রমেই গ্রহণ করা যায় না। সরকারের প্রতি আহ্বান, অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করুন। চিহ্নিত করার বহু এজেন্ট আছে। স্থানীয়ভাবে অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষরা তো আছেই, একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করব, আপনারা অধিকতর তৎপর হয়ে তাদেরকে আইনের শাসনের আওতায় নিয়ে আসুন।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এসব ঘটনা নিরবিচ্ছিন্নভাবে ঘটে আসছে। কিন্তু কোনো হামলার বিচার হয় না। এসব ঘটনা ঘটলে হাজার হাজার লোকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, এতে অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাই।’
এসময় ঢাবি শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুর রহিম, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, নোয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান, নীল দলের আহ্বায়ক ড. মো. সামাদ, গণিত বিভাগের শিক্ষক চন্দ্রনাথ পোদ্দার এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসসহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন।
রুখে দাও সাম্প্রদায়িকতা, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার এই মিছিলে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও। সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকারীদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবি জানান তারা।
একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের ১৫টি জেলায় যা ঘটেছে তা আমাদের দেশের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করে দিয়েছে। কোনো অবস্থাতেই এসব সন্ত্রাসীদের উঠে দাড়াতে দেওয়া যাবে না। এদিন সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করেন প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও ছাত্র ইউনিয়ন। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।