উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ হলে ২০৫০ সালে দেশে ৬.৫ মিলিয়ন টন চাল উদ্বৃত্ত থাকবে পাঁচ দশকে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তায় অসামান্য অবদান রাখছে ব্রি
মতিনুজ্জামান মিটু: টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) এবং বর্তমান সরকারের ভিশন ২০২১ এবং ২০৪১ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্রি ইতোমধ্যে রাইস ভিশন -২০৫০ প্রণয়ন করেছে। রাইস ভিশন বাস্তবায়নের পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে ব্রি ডবলিং রাইস প্রোডাক্টিবিটি নামে একটি স্ট্র্যাটেজিক প্লান তৈরি করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, উৎপাদনের গতিশীলতা অব্যাহত থাকলে চালের উৎপাদন ২০৩০ সালে ৪৬.৯, ২০৪০ সালে ৫৪.১ এবং ২০৫০ সালে ৬০.৯ মিলিয়ন টন এ উন্নীত হবে। ফলে দেশে ২০৩০ সালে ৪.২, ২০৪০ সালে ৫.৩ এবং ২০৫০ সালে ৬.৫ মিলিয়ন টন চালে উদ্বৃত্ত থাকবে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ব্রির ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে সরকারি এ গবেষণা সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর ও ঊর্ধ্বতন যোগাযোগ কর্মকর্তা কৃষিবিদ এম আব্দুল মোমিন আরও জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উত্তরণের ভিত্তি হচ্ছে কৃষি। আর বাংলাদেশে খাদ্যশস্য বলতে ধানকেই বুঝা হয়। ধান এ দেশের মানুষের জীবনাচরণ, খাদ্যাভ্যাস ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিভিন্ন ধান উৎপাদন মওসুম ও পরিবেশ উপযোগী আধুনিক ধান এবং লাগসই ধান উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বা ব্রি। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশবাসীর খাদ্য চাহিদা পূরণ ও পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে তালমিলিয়ে ধানের ফলন, উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ব্রত নিয়ে এ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
বিগত পাঁচ দশকে দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে অসামান্য অবদান রেখে চলছে ব্রি’র এ কর্মকর্তাদ্বয় জানান, অতীতের তীব্র খাদ্য ঘাটতির বাংলাদেশ বর্তমানে উদীয়মান অর্থনীতির নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এক সময়ের তলাবিহীন ঝুড়ি এখন শক্ত ভিত্তির উদ্বৃত্ত খাদ্যের বাংলাদেশ; ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে তৃৃতীয় এবং গড় ফলনের হিসেবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম। স্বাধীনতার পর এদেশের জাতীয় জীবনে অন্যতম অসামান্য অর্জন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা।
এ অর্জনের পেছনে রয়েছে দেশের বিজ্ঞানীদের প্রতি জাতির পিতার সুদূরপ্রসারী দিকনির্দেশনা, বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, ধান বিজ্ঞানীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং কৃষকের নিরলস পরিশ্রম। এই অসামান্য অর্জন সম্ভব হয়েছে প্রধানত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উচ্চফলনশীল ধানের জাত ও আনুষঙ্গিক লাগসই চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং কৃষকপর্যায়ে এসব প্রযুক্তির সফল প্রয়োগে।
১৯৭০-৭১ অর্থবছরে দেশের ৭ কোটি ১২ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে চালের উৎপাদন ছিল মাত্র এক কোটি ১০ লাখ টন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে বলেছিলেন-‘দুনিয়া ভরে চেষ্টা করেও আমি চাল কিনতে পারছি না। চাল পাওয়া যায় না। যদি চাল খেতে হয় আপনাদের চাউল পয়দা করে খেতে হবে।’এটা ছিল বর্তমান সাফল্যের অনুপ্রেরণা বা দিকনির্দেশনা।
সেই নির্দেশনাকে ধারণ করে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃৃত্বে গঠিত ‘দিন বদলের সরকার’ সার এবং জ¦ালানি তেলের দাম কমানো, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ সুবিধা বৃদ্ধি, কৃষিতে প্রণোদনা এরপর পৃষ্ঠা ২, সারি ১