টেকসই উন্নয়নে আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার আহ্বান অর্থমন্ত্রীর
সোহেল রহমান: টেকসই উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার ব্যাংককে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের ‘এশিয়া প্যাসিফিক আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন’ (ইউএন-এসকাপ)-এর ‘সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি, দারিদ্র্য হ্রাস ও উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন (এমপিএফডি) সংক্রান্ত কমিটি’র তৃতীয় অধিবেশনে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রমাণক ভিত্তিক নীতি বিশ্লেষণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও চাহিদাভিত্তিক আঞ্চলিক উপদেষ্টা পরিসেবার মাধ্যমে ইউএন-এসকাপ বাংলাদেশকে বিরূপ পরিবেশে টিকে থাকার সক্ষমতা তৈরি করতে এবং আঞ্চলিক সংযোগকে গভীর করতে সহায়তা করবে। সেই সঙ্গে সকল স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে সমর্থন এবং বহু অংশীদারিত্ব বিকাশে সহায়তা করবে।
ইউএন-এসকাপ-এর উদ্যোগে একটি বিষয়ভিত্তিক উপদেষ্টা গোষ্ঠী গঠনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন যে, এটি সদস্য দেশগুলিকে তাদের উপযুক্ত সামষ্টিক-অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়নে সহায়তা করে এমন সামষ্টিক-অর্থনৈতিক নীতি-পরামর্শ দিতে সক্ষম হবে। এছাড়া কোভিড-১৯ মোকাবেলায় এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানুষের জন্য সার্বজনীন এবং সাশ্রয়ী টিকা নিশ্চিত করতে এসকাপ নেতাদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রার পথ পরিক্রমার ওপর আলোকপাত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কোভিড-১৯ বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে বিশাল চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছিল, কিন্তু বর্তমান সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপে বাংলাদেশ তার অর্থনীতিতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার পথে অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে। এর ফলে যখন বৈশ্বিক অর্থনীতিতে ৩%-এর অধিক সংকোচন দেখা যাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ ২০২০ ও ২০২১ সালে যথাক্রমে ৩.৫% এবং ৫.৫% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালনের মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য গর্ব অনুভব করে। একইভাবে বাংলাদেশ জাতিসংঘের অন্যান্য বেসামরিক কর্মকা-েও সরাসরি অবদান রাখতে আগ্রহী।
অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, উদ্বোধনী অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে থাইল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী আড়খোম টারম্প পিতিয়া আইসিথ, ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রী শ্রী মুলিয়ানি ইন্দ্রবতী, ভুটানের অর্থমন্ত্রী লিওনপো নামগে শেরিং, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রী এইচ ওমর আইয়ুব খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় আরও জানায়, অধিবেশনে বিভিন্ন এজে-াভিত্তিক আলোচনায় বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক নীতি ও উদ্ভাবনী অর্থায়ন কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়, যা কোভিড-১৯-এর ফলে সৃষ্ট বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য সহায়ক।
এছাড়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা আর্থিক সম্পদের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগের সংযোগ সাধনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন, যা তাদের অর্থনীতিকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ঘাত সহায়ক এবং টেকসই উন্নয়নের পথের দিকে রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও