রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাদ্রাসায় হামলা নিহত ৭
আমান উল্লাহ : উখিয়ায় ১৮ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ নামের একটি মাদ্রাসায় ২২ অক্টোবর শুক্রবার ভোরে দুস্কৃতিকারিরা হামলা করে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭জনে দাঁড়িয়েছে। প্রথমে ঘটনাস্থলে ৪জন ও পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৩জনের মৃত্যু হয়। নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার ও সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
এতে আরো আহত হয়েছে অন্তত ১২ জন রোহিঙ্গা। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) ভোর রাত ৪টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে পুলিশ উক্ত ক্যাম্পে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের কথা বলা হলেও পরে ক্যাম্পে দায়িত্বরত এপিবিএন পুলিশ মাদ্রাসায় হামলার কথা নিশ্চিত করেন। নিহতরা হলেন- রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১২, ব্লক-জে-৫ এর বাসিন্দা হাফেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ ইদ্রীস (৩২), ক্যাম্প-৯ ব্লক-১৯ এর মৃত মুফতি হাবিবুল্লাহর ছেলে ইব্রাহীম হোসেন (২৪), ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এইচ -৫২ এর নুরুল ইসলামের ছেলে মাদ্রাসার ছাত্র আজিজুল হক (২২), একই ক্যাম্পের ভলান্টিয়ার আবুল হোসেনের ছেলে মো. আমীন (৩২)।
এছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ‘এফডিএমএন’ ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এফ-২২ এর মোহাম্মদ নবীর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫), এফডিএমএন ক্যাম্প-২৪এর রহিম উল্লাহর ছেলে মাদ্রাসা শিক্ষক হামিদুল্লাহ (৫৫) ও ক্যাম্প-১৮, ব্লক- এইস ৫২ এর নুর মোহাম্মদের ছেলে ও মাদ্রার ছাত্র নুর কায়সার(১৫)।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ আর্মাড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএন এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার শিহাব কায়সার জানান, শুক্রবার রাত আনুমানিক ৪টার দিকে ‘এফডিএমএন’ ক্যাম্প-১৮ এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালায়। হামলায় মাদ্রাসায় অবস্থানরত ৪ জন এফডিএমএন সদস্য মারা যায়। উক্ত ঘটনা জানতে পেরে ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধারপূর্বক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ৩ জন মারা যায়।
এ সময় পুলিশ হামলাকারীদের একজনকে একটি দেশীয় লোডেড ওয়ান শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি ও একটি ছুরি সহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এ ঘটনায় ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা ‘মদুতুল উম্মা’ মাদ্রাসা ও আশপাশের এলাকায় ব্লকরেইড পরিচালনা করে আসছে এবং অন্যান্য ক্যাম্প এলাকায়ও একই সাথে ব্লক রেইড পরিচালনা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে উখিয়া থানা পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল এবং মর্গে প্রেরণ করেছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাদ্রাসায় হামলার ঘটনায় এই পর্যন্ত ৭জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদেহগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও