বৈধভাবে কর্মী পাঠালে রিক্রুটিং এজেন্সিকে মানবপাচার আইনে হয়রানি না করতে বৃহস্পতিবার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে ঐক্যমত্য
ভূঁইয়া আশিক রহমান : বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি বৈধ প্রক্রিয়ায় বিদেশে কোনো কর্মীকে পাঠানোর পর যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, এর জন্য রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। যদি তার কোনো ব্যত্যয়ও থাকে, তাহলে অভিবাসন আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে, মানবপাচার আইনে নয়।
বৈধভাবে কর্মী পাঠানো বৈধ এজেন্সির বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ আসে, তাহলে প্রথম তদন্ত হবে বিএমইটির মাধ্যমে। কেননা বৈধভাবে যারা বিদেশে যান তাদের সকল প্রসেস বিএমইটির মাধ্যমে হয়ে থাকে। পুলিশ বিএমইটির কাছেই প্রথমে যাবে তথ্যানুসদ্ধানের জন্য। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কারও বিরুদ্ধে কোনো থানায় অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স দেওয়া প্রতিষ্ঠান জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোকে (বিএমইটি) হস্তান্তর করবে। বিএমইটি অভিযোগের তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে সমাধান করবে। যদি সমাধান করতে না পারে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করবে মানবপাচার অথবা অভিবাসন আইনে মামলা নেওয়ার জন্য।
আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সভাপতিত্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি, বিএমইটির মহাপরিচালক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বায়রার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সদ্য সাবেক সভাপতি বেনজীর আহমদ এমপি, সাবেক সভাপতি জনাব মোহাম্মদ নূর আলী, সাবেক সভাপতি জনাব আবুল বাসার, সাবেক মহাসচিব জনাব আলী হায়দার চৌধুরী, সদ্য সাবেক মহাসচিব জনাব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বায়রার সাবেক সভাপতি ও ইউনিক গ্রুপের এমডি মোহা. নূর আলী দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, আজকের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। আমাদের দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে তারা শুনেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতিবাচক সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। এমন সিদ্ধান্তের জন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে।
সদ্য সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, আইনের প্রতি আমরা সবাই শ্রদ্ধাশীল। আইনের বাস্তবায়নও চাই। তবে যে আইন যে জন্য তৈরি করা হয়েছে তার প্রয়োগ চাই। বিগত দিনে আইনের অপব্যবহার হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জনশক্তি রপ্তানি খাতের সহায়তার জন্য অভিবাসন আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু কোনো অভিযোগ পেলেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো কিছু যাচাই-বাছাই না করে মানবপাচার আইনে মামলা করে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের হয়রানি ও গ্রেপ্তার করে। এর ফলে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হন।
প্রসঙ্গত বৈধ অভিবাসনের জন্য ২০১৩ সালের অভিবাসন আইন বাস্তবায়নের দাবিতে পথে নামেন রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা। বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।