সোহেল রহমান : করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে এবছরও আয়কর মেলা হচ্ছে না। তবে মেলা না হলেও বিভিন্ন কর অঞ্চল ও সার্কেল কার্যালয়ে গত বছরের মত পুরো নভেম্বর মাস জুড়ে করদাতাদের সেবা দেয়া হবে। আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস উদযাপন করা হবে।
মঙ্গলবার ঢাকার সেগুনবাগিচাস্থ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আবু হেনা মুঃ রহমাতুল মুনিম এ কথা জানান।
প্রসঙ্গত: গত ২০১০ সালে থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টানা নয় বছর মাসব্যাপী আয়কর মেলার আয়োজন করে আসছে এনবিআর। তবে করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে ২০২০ সালে করমেলা হয়নি।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সরাসরি কর মেলা না হলেও ১ থেকে ৩০ নভেম্বর পুরো মাসব্যাপী কর সংস্কৃতির বিকাশ, করদাতাদের সচেতনতা বাড়াতে কর সেবা প্রদান করা হবে। দেশব্যাপী ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে অফিস চলাকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে আয়কর রিটার্ন গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে রিটার্ন দাখিল করা করদাতাদের তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দেয়া হবে।
মাসব্যাপী কর সেবা প্রদানে বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছেÑ সেবাকেন্দ্রগুলোতে ইলেক্ট্রনিক ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর (ইটিআইএন) নিবন্ধন ও পুনঃনিবন্ধনের ব্যবস্থা; প্রত্যেক কর অঞ্চলের ওয়েবসাইটে আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন ফরম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সেবা প্রদান। মাসব্যাপী করসেবা উপলক্ষে ২৪ নভেম্বর ১৪১ জন সর্বোচ্চ করদাতাকে ট্যাক্স কার্ড প্রদান এবং জেলা ও সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে ৬৬৬ জন সেরা করদাতাকে ক্রেস্ট, পরিচিত ও সম্মাননা সনদ দেয়া হবে।
ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলে কেন্দ্রীয়ভাবে ও অন্য সব কর অঞ্চল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যথাযথ আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে জেলা ও সিটি কর্পোরেশনভিত্তিক সেরা করদাতা সম্মাননা দেবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, সরকারি কর্মকর্তাদের রিটার্ন দাখিলের সুবিধা জন্য ১ থেকে ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ সচিবালয় ও অফিসার্স ক্লাবে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক থাকবে। এছাড়া সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের জন্য ঢাকা সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে ৯ ও ১০ নভেম্বর দুই দিন রিটার্ন গ্রহণ ও কর বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সেবা দেয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ইটিআইএন নিবন্ধন ২৬ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমানে মোট ইটিআইএন রয়েছে প্রায় ৬৮ লাখ নাগরিকের।
এক প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে টিআইএনধারীর সংখ্যা প্রায় ৬৮ লাখ। গত এক বছরে আরও ১৭ লাখ নতুন টিআইএন শনাক্ত হয়েছে। শতকরা হিসাবে বেড়েছে ২৬ শতাংশ।
আরও বেশি লোকজনকে করের আওতায় আনতে ডোর টু ডোর কার্যক্রম চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ জন্য এনফোর্সমেন্টের ওপর জোর দেয়া হয়েছে। কাঙ্খিত পর্যায়ে কর জাল উন্নীত করা সম্ভব হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।