বঙ্গবন্ধু শিল্প পুরস্কার শিল্পায়ন বিকাশে সহায়ক হবে : শিল্পমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর শিল্প পরিকল্পনা ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে শিল্পায়নের যে স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছিল সেই স্বপ্নের সোনালি পথ ধরে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র দিক-নির্দেশনায় দেশে বহুমুখী শিল্পায়নের ধারা জোরদার এবং বেসরকারি খাতে দক্ষতা ও গতিশীলতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার প্রবর্তন করা হলো। এ পুরস্কার প্রদানের লক্ষ্য হচ্ছে, শিল্প উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে স্মরণ করা। আশা করি বঙ্গবন্ধুর নামে প্রবর্তিত এ পুরস্কার সৃজনশীল উদ্যোক্তা তৈরি এবং শিল্পায়নের বিকাশে সহায়ক হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এই এসব কথা বলেন।
জানানো হয়, প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। তবে এই পুরস্কার প্রতিবছর দেয়া হবে। ৭ ক্যাটাগরিতে ২৩ শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কারগুলো তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. গোলাম ইয়াহিয়া।
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রাজ্ঞ নেতৃত্ব বাঙালি জাতিকে অন্ধকারের অমানিশায় আলোর পথ দেখিয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে বৈশ্বিক শিল্পায়ন ও অর্থনীতি যেখানে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সফল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে এটি একটি মিরাকল হলেও বাংলাদেশের জন্য এটি প্রতিষ্ঠিত বাস্তবতা। কোনো যাদুকাঠির স্পর্শে নয়, বরং এ দেশের মাটি ও মানুষকে নিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এই দু:সময়ে আমাদের অর্থনীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছে। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শিল্পোন্নত দেশগুলোতে ঋণাত্মক জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ ৫.২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জিডিপি এবং বৈশ্বিক গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধির চেয়ে বেশি।
প্রথম পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে দেওয়া হয় ৩ লাখ টাকা ও ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট। এছাড়াও দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা ও ২০ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা ও ১৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
পুরস্কার পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে ৪টি, মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে ৪টি, ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, মাইক্রো শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি, হস্ত ও কারু শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি এবং কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে ৩টি।
পুরস্কার প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- বৃহৎ শিল্প : এ বছর বৃহৎ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে চারটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে প্রথম স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং দ্বিতীয় পুরস্কার পায় জজ ভূঞা টেক্সটাইল মিলস। যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে আদুরি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও ইউনিভার্সাল জিন্স লিমিটেড।
মাঝারি শিল্প : মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে চার প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে যৌথভাবে অকো-টেক্স লিমিটেড এবং ফরচুন সুজ লিমিটেড। দ্বিতীয় পুরস্কার রহিম আফরোজ রিনিউয়েবল এনার্জি লিমিটেড এবং তৃতীয় মাধবদী ডাইং ফিনিশিং মিলস লিমিটেড।
ক্ষুদ্র শিল্প : ক্ষুদ্র শিল্পে তিনটি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি, এসআর হ্যান্ডিক্র্যাফটস এবং আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড পুরস্কার পেয়েছে।
মাইক্রো শিল্প : মাইক্রো শিল্পে পুরস্কার পেয়েছে মেসার্স কারুকলা, ট্রিম টেক্স বাংলাদেশ ও জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং।
হাইটেক শিল্প : হাইটেক শিল্পের জন্য ইঞ্জিন লিমিটেড, সুপারস্টার ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও মীর টেলিকম লিমিটেড।
হস্ত ও কারুশিল্প : হস্ত ও কারুশিল্প ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে ক্লাসিকাল হ্যান্ডমেড প্রোডাক্ট বিডি, আয়োজন এবং সোনারগাঁ নকশি কাঁথা মহিলা উন্নয়ন সংস্থা। কুটির শিল্প : কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে কুমিল্লা আর্ট অ্যান্ড ক্রাফটস, রঙ-মেলা নারী কল্যাণ সংস্থা এবং অগ্রজ পুরস্কার পেয়েছে।