স্টার্ট-আপ আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে : অর্থমন্ত্রী
সোহেল রহমান : অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম-এর যাত্রা শুরু ২০১০ সাল থেকে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২ হাজার ৫০০টির বেশি স্টাটর্-আপ কাজ করছে এবং আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। দেশে বর্তমানে ৪০টিরও বেশি এক্সেলেরেটর এবং ইনকিউবেটর প্রোগ্রাম তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু স্টার্ট-আপ দেশে প্রচুর বিনিয়োগ নিয়ে এসেছে, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। স্টার্ট-আপদের মাধ্যমে ১৫ লাখের বেশি মানুষের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর আগারগাঁও-এ বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ-এর মাল্টিপারপাস অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) ২০২১’ গ্র্যান্ড ফিনাল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিগ ২০২১ আয়োজন এমন একটি উদ্যোগ, যা স্টার্ট-আপ সংস্কৃতি গঠন ও উন্নয়নে বর্তমান সরকারের অঙ্গীকারের একটি সুস্পষ্ট প্রতিফলন। বাংলাদেশের সামনে জনমিতিক লভ্যাংশের পূর্ণ সম্ভাবনাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। তরুণদের মধ্যে সব ধরনের ব্যবসায় উদ্যোগ বা স্টার্ট-আপ সৃষ্টিতে সহায়তার লক্ষ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল।
সেই ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটেও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। অচিরেই আইসিটি বিভাগ থেকে স্টার্ট-আপ গঠনে এই তহবিল সুবিধা লাভ করবে তরুণ সমাজ। যুবসমাজকে সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল এবং উৎপাদনমুখী শক্তিতে রূপান্তরে সরকারের এ কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে সকল প্রকার তথ্য-প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত হতে হবে এবং নিজেদেরকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরাই একদিন গুগল, টেসলা, আমাজন-এর মত বিশাল কোম্পানিতে পরিণত হবে। এ আয়োজনে প্রাথমিক পর্যায়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫৭টি দেশ থেকে ৭ হাজারের অধিক উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক ও স্টার্ট-আপের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশ আজ আইসিটি খাতে সারাবিশ্বে একটি জায়গা করে নিয়েছে। দেশি-বিদেশি স্টার্ট-আপদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নতুন উদ্ভাবন বা উদ্ভাবনী স্টার্ট-আপ খুজেঁ বের করতে, আইডিয়া প্রকল্প তরুণ উদ্যোক্তা অর্থাৎ স্টার্ট-আপদের নতুন উদ্ভাবনী ধারণাকে উৎসাহিত করে দেশে একটি সঠিক স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম গড়তে বিশেষ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ঐতিহ্যবাহী অনেক কোম্পানির বাজার দখল করে নিয়েছে শুধুমাত্র তারুণ্যের বুদ্ধি-বৃত্তিক উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে। ফেসবুক, উবার, এয়ার-বিএনবি, টুইটার, লিঙ্কড-ইন, টেসলা বা ড্রপবক্সের মতো আমেরিকান প্রধান প্রযুক্তি সংস্থাগুলি, তাদের কোনটিই ২০ বছর আগে ছিল না – আজকের দিনে এসব কোম্পানি মাত্র কয়েক বছরে শত শত বিলিয়ন, এমন কী ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।
ই-কমার্স জগতের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান ‘অ্যামাজন’ ঘন্টায় আড়াই মিলিয়ন ডলার নীট প্রফিট করে, যা সত্যি অবিশ্বাস্য। বিশ্বের বৃহত্তম মিডিয়া সংস্থা ‘ফেসবুক’-এর বেতনভুক্ত কোন কন্টেন্ট নির্মাতা নেই। বিশ্বের বৃহত্তম হোটেল চেইন ‘অরৎ-নহন’-এর কোনো হোটেল নেই। বিশ্বের বৃহত্তম ট্যাক্সি কোম্পানি ‘উবার’ একটিও ট্যাক্সির মালিক নয়। এই প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সার্ভিস সেক্টরে বিপ্লব ঘটিয়েছে।