রাশিদ রিয়াজ : বড় ধরনের ৫শ কোম্পানির বার্ষিক খরচ খুব সহজেই ১শ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালমার্ট গতবছর যে খরচ করেছে তা দেশটির সামরিক ব্যয়ের ৭০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় কোম্পানির খরচ যেমন এ্যাপল, কস্টকো এবং ওয়ালমার্ট বছরে ১শ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করে থাকে। তাদের এত বিপুল খরচের আকার বুঝাতে মার্কিন সামরিক ব্যয়ের সঙ্গে তা তুলনা করে দেখা যেতে পারে।
প্রতিটি কোম্পানির ব্যবসায়ী কার্যকলাপের মোট খরচ নির্ধারণ করতে, বিক্রয়, সাধারণ ও প্রশাসনিক ব্যয় এবং পণ্য বিক্রির খরচ বুঝায়। পণ্য বিক্রির খরচে পরিবহন ছাড়াও বিজ্ঞাপন বাবদ বড় অংকের অর্থ খরচ করে এসব কোম্পানি। তাছাড়া পণ্য এবং পরিষেবা বিক্রির সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন খরচের পাশাপাশি প্রতিদিনের কোম্পানির বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের খরচ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কর্মচারীদের বেতন, অফিস ভাড়া এবং বিপণন খরচ। সরাসরি পণ্য উৎপাদনের সাথে সম্পর্কিত যেকোন খরচ ছাড়াও কোম্পানিকে কাঁচামাল ও শ্রম বাবদ খরচ করতে হয়।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ব্যয় ছিল ৭৭৮ বিলিয়ন ডলার। এটি বিশে^ সর্বোচ্চ সামরিক ব্যয়। এরপর চীনের সামরিক ব্যয় ছিল একই বছর ২৫২ বিলিয়ন ডলার। এদুটি দেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশ ১শ বিলিয়ন ডলার সামরিক ব্যয় করেনি। অথচ গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ওয়ালমার্টের খরচ ছিল ৫৩৭ বিলিয়ন ডলার। অ্যামজনের পরিচালন ব্যয় ছিল ৯শ বিলিয়ন ডলার যা গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ব্যয়ের ১৬ শতাংশ বেশি। অবশ্য কোনো কোম্পানির বেশি ব্যয় মানে কোম্পানিটি বেশি লাভ করে তা নয়। এসব কোম্পানি এত বিপুল ব্যয়ের পর কি পরিমান লাভ করে তা নির্ধারণ করা যায় প্রতিটি ডলারের রাজস্ব থেকে কতটা লাভ আসে তার ওপর। এক্ষেত্রে সহজ সূত্র হচ্ছে আয়কে ব্যয় দিয়ে ভাগ করা।
এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এ্যাপেল কোম্পানি ব্যয়ের তুলনায় আয় বেশি করে ৩৮ শতাংশ মুনাফা তুলেছে আর ওয়ালমার্টের মুনাফা হচ্ছে ৪ শতাংশ। এ দুটি কোম্পানির লাভের পার্থক্য ব্যবসায়ীক কৌশলের ভিন্নতা তুলে ধরে। ওয়ালমার্টের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা হল খরচের নেতৃত্ব, মানে এটি সম্ভাব্য সর্বনি¤œ মূল্যের প্রস্তাব দিয়ে তার প্রতিযোগীদের পরাজিত করার চেষ্টা করে। যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ৪,৭৪৩টি শোরুম ওয়ালমার্টের এই কৌশলটিকে কার্যকর করতে সক্ষম করে। অন্যদিকে এ্যাপল শক্তিশালী ব্র্যান্ডিং এবং প্রিমিয়াম মানের সমন্বয় করে তার পণ্যের উচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে। এর ফলে বৃহত্তর মার্জিন এবং মূল্যায়নে এ্যাপল হল বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানি যার বাজার মূলধনের পরিমান ২.৪ ট্রিলিয়ন ডলার।