ভূঁইয়া আশিক রহমান : অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবউল্লাহ বলেছেন, অনেক সময় খাদ্যের অভাবে নয়, খাদ্য সংকট হয়Ñ দুর্নীতি, মজুতদার, চোরাচালানকারী, মুনাফাখোরদের কারণে। চালের বাজারের বিরাট নিয়ন্ত্রণকারী একটা গ্রুপ হচ্ছে চাতাল মালিক। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতার কারণে বিপর্যয় ঘটে হয়ে থাকে। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে, আমি বিস্মিত হবো না যেভাবে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে, এই দাম আরও বাড়বে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে পণ্য। ক্রয়ক্ষমতার বাইরে মানুষ খাদ্যপণ্য কিনতে পারবে না। তখন মানুষের খাদ্য ভোগের পরিমাণ কমবে।
তিনি বলেন, কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের দাম পায় না। অথচ ভোক্তাকে চড়া মূল্য দিয়ে খাদ্যপণ্য কিনতে হয়। খাদ্য বিতরণ, বাজারজাতকরণে সরকারি নীতি থাকা উচিত ছিলো। অবকাঠামো গড়ে তোলা দরকার ছিলো। কৃষকেরা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য যেন তাদেরই নিয়ন্ত্রণে শহরে নিয়ে আসতে পারেন, বিশ^বাজারে রপ্তানি করতে পারেন, তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য সহায়তা, প্রশিক্ষণ দেওয়া, এ জাতীয় সংগঠন তৈরি করা প্রয়োজন ছিলো।
দেশে হরাইজেন্টাল সমবায় আছে। অর্থাৎ পাশাপাশি জমি যাদের, তাদের নিয়ে একটা সমবায় হয়। বিশেষ করে সেচের জন্য। কিন্তু এখন দেশে কৃষিপণ্য বিপণনের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন ভার্টিকেল সমবায় ব্যবস্থা গড়ে তোলা। অর্থাৎ ওপর থেকে নিচ, নিচ থেকে ওপরÑএ ধরনের একটা সমবায় ব্যবস্থা দরকার। যেখানে সবজি উৎপাদন হয়, সেখানে স্টোরেজ, হিমাগার থাকতে হবে। শুধু আলুর জন্যই নয়, অন্যান্য ফসলের জন্যও। পণ্যের মাননিয়ন্ত্রণ স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন থেকে শুরু করে পরিবহনÑ এক্ষেত্রে কৃষকদের সমবায়ভিত্তিতে সংগঠিত করার দরকার আছে। তারাই তাদের এলাকায় গুদামজাতকরণ ও সংরক্ষণ করবেন। বিভিন্ন জায়গায় পণ্য তারাই নিয়ে যাবেন। তাদের নিয়ন্ত্রণেই শহরে বিক্রি করবেন। এটা করতে পারলে কৃষকদের হাতে কিছু টাকাপয়সা আসবে।
[২] বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, দেশে খাদ্য সরবরাহের চেইন আগের চেয়ে বেড়েছে, শক্তিশালী হচ্ছে। খাদ্য সরবরাহ চেইন সবসময় মজবুত রাখতে হবে। খাদ্য থাকলেই তো হবে না। বিশ^ ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ ভালো করছে। কারণ মানুষের কাছে টাকাপয়সা আছে। মজুরি বেড়েছে। গ্রামে মজুরি বেড়েছে। খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে আমরা তো আইল্যান্ড ন
ই। বিশ^ অর্থনীতির মধ্যে আছি। বিশে^ যদি খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ে, আমাদের এখানেও কিছুটা প্রভাব পড়বে। এখন পড়ছেও। আমার ধারণা, হঠাৎ অর্থনীতি খুলে যাওয়ায় চাহিদার চাপ বেড়ে গেছে। জাহাজের খরচ বেড়ে গেছে। এ কারণে সাময়িক খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। শিগগিরই স্থিতিশীল পর্যায়ে চলে আসবে বলে ধারণা আমার।
কর্মহীন মানুষরা ধীরে ধীরে কাজে ফিরে আসছে। সরকার সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিগুলো বাড়িয়েছে। ইনফরমাল সেক্টর আবারও সক্রিয় হতে শুরু করেছে। ছোট ছোট দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চার হচ্ছে। সম্পাদনা : হাসান হাফিজ