ক্রয় কমিটিতে ১,৫৯০ কোটি টাকা ব্যয়ের ৬ প্রস্তাব অনুমোদন সাড়ে ৭৪ লাখ টন জ্বালানি তেল আমদানির সিদ্ধান্ত
সোহেল রহমান : আগামী ২০২২ সালের পঞ্জিকা বছরের জন্য বিভিন্ন ক্যাগারির মোট সাড়ে ৭৪ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার। এর মধ্যে ১৬ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল এবং ৫৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল রয়েছে। ‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন’ (বিপিসি) এই জ্বালানি তেল আমদানি করবে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ভার্চুয়াল বৈঠকে এ-সংক্রান্ত দুটি পৃথক আমদানি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিং-এ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের জানান, ১৬ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সৌদি আরবের ‘আরামকো’ এবং আবুধাবী’র ‘এডনক’ থেকে ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে’ আমদানি করা হবে। অন্যদিকে পাঁচ ক্যাটাগরির মোট ৫৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেলের অর্ধেক সরকারি পর্যায়ে জি-টু-জি-এর আওতায় এবং অবশিষ্ট অর্ধেক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে আমদানি করা হবে।
জানা যায়, চলতি ২০২১ সালের পঞ্জিকা বছরে মোট পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪৯ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। সে হিসাবে আগামী বছরে পরিশোধিত জ্বালানি তেলের আমদানি বাড়ছে ৮ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। প্রস্তাব অনুযায়ী, আগামী বছরে ৪৪ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল (ডিজেল), ৪ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন জেট এ-১ ফুয়েল, ৪ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন মো-গ্যাস (অকটেন) ৩ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল ও ১ লাখ ৫০ হাজার টন মেরিন ফুয়েল আমদানি করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জানান, এছাড়া ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে চলতি পঞ্জিকা বছরের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের জন্য ৮০ হাজার মেট্রিক টন হাই সালফার ফার্নেস অয়েল আমদানিসহ ৬টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ছয় ক্রয় প্রস্তাবে মোট মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা।
ফার্নেস অয়েল আমদানি করা হবে সিঙ্গাপুরের ‘ইউনিপেক সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড’ থেকে। এতে ব্যয় হবে ৩৬৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
তিনি জানান, বৈঠকে ‘বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন’ (বিসিআইসি) কর্তৃক ইউরিয়া সার আমদানির তিনটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ত্রিশ হাজার মেট্রিক টন করে তিনটি প্রস্তাবে মোট সার আমদানি করা হবে মোট ৯০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে সৌদি আরব-এর ‘বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন’ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ১৯৪ কোটি ৯৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা; সংযুক্ত আরব আমিরাত-এর ‘ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড’ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ১৯৪ কোটি ৯৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এবং কাতার-এর ‘মুনতাজাত’ থেকে ৩০ হাজার মে.টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ১৯৭ কোটি ৭৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ব্যয় হবে।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে বিসিআইসি কর্তৃক চট্টগ্রামের ‘টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড’-এর জন্য ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসফরিক এসিড ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটি সরবরাহ করবে ঢাকাস্থ ‘মেসার্স এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনপুট’ (প্রধান সরবরাহকারী: সংযুক্ত আরব আমিরাত-এর ‘মেসার্স সান ইন্টারন্যাশনাল এফজেডই’)। এতে ব্যয় হবে ৬১ কোটি ৪৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
তিনি জানান, এছাড়া বৈঠকে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন’ (বিএফডিসি) কর্তৃক ‘বিএফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণ’ প্রকল্পের (প্যাকেজ নং-ডব্লিউডি-১) পূর্ত কাজের ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ কাজটি করবে ‘মেসার্স বিশ্বাস ট্রেডিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন’। এতে ব্যয় হবে ২৭৪ কোটি ৫ লাখ ৩২ হাজার টাকা।