আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, এলএনজি ও সারের দাম বৃদ্ধি সরকারের ভর্তুকি ব্যয় বাড়তে পারে ২৫ হাজার কোটি টাকা
সোহেল রহমান : আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ও সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় চলতি অর্থবছরে সরকারের ভর্তুকি ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। ফলে অতিরিক্ত ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন হতে পারে। অর্থবছর শেষে ভর্তুকি আকার কত হতে পারেÑ ইতোমধ্যেই তা মূল্যায়ন করতে শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, চলতি নভেম্বরে মাঝামাঝি সময়ে ভর্তুকি পুনর্মূল্যায়নের কাজ শেষ হতে পারে। তখন বোঝা যাবে যে, ভর্তুকি কী পরিমান বাড়ানো যায় বা বাড়তে পারে।
জানা যায়, চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ বাবদ ৪৯ হাজার কোটি টাকা নির্ধারিত রয়েছে। এর মধ্যে কৃষি খাতে ভর্তুকি রাখা হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এই ভর্তুকিতে পোষাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং অধিশাখা থেকে অর্থ বিভাগে প্রেরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে- সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে অনুসারে চলতি অর্থবছরে রাসায়নিক সার বাবদ ১৮ হাজার কোটি টাকারও অধিক ভর্তুকির প্রয়োজন হতে পারে।
সূত্রমতে, জ্বালানি খাতেও চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি ধরা রয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারের যে অবস্থা এতে এই ভর্তুকিতে কুলাবে না। কারণ চলতি অর্থবছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের ব্যারেল প্রতি দাম ছিল ৪৫ ডলার। সেই তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৪ ডলার দরে।
শুধু তাই নয়, বিশ্বে এলএনজি’র দামও অনেক বেড়েছে। আমদানি করা এলএনজি’র সাথে দেশীয় গ্যাসের মিশ্রণে প্রতি ঘনফুটের খরচ পরে ২২ টাকা। কিন্তু দেশের বাজারে তা বিক্রি করতে হচ্ছে সবের্বাচ্চ ৯ টাকা করে। এখন এলএনজির দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে চলেছে। ফলে প্রতি ঘনফুট এলএনজি’র মূল্য ৩০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ফলে এ পণ্যটির পিছনে আরও ভর্তুকি দেয়ার প্রয়োজন হবে।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে বছর শেষে জ্বালানি খাতে ১০ হাজার কোটি টাকা এবং এলএনজি খাতে ৬ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ভর্তুকির প্রয়োজন হবে। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও