সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসও শেয়ারবাজারে সূচক উর্ধ্বমুখী
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই নিয়ে তিন কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী অব্যাহত রয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও বেড়েছে প্রধান সূচক। ডিএসইর লেনদেন ১৫শ কোটি টাকার উপরে হয়েছে। এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, কয়েকদিন পর শেয়ারবাজারে লেনদেন গতি বৃদ্ধি পেয়েছে এটা বাজারের জন্য ভালো।
সংশ্লিষ্টরা আরও বলেন, টানা পতনের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছিল সেটা কেটেগেছে। এবিষয়ে বিনিয়োগকারী কাজী আব্দুল রাজ্জাক বলেন, শেয়ারবাজার খুবই সেনসিটিভ। যেকোন বিষয় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আর কোনো কারণে বাজারে একটু দরপতন হলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়। সবাই তখন বিক্রি করতে চায়। এতে বিক্রির চাপ বেড়ে গিয়ে পতনের মাত্রা বেড়ে যায়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের প্রথম আধঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান সূচক ৭০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে শুরুর এই বড় উত্থান শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়নি। লেনদেনের শেষদিকে এসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়। অবশ্য বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। এতে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৯৯৫ পয়েন্টে উঠে আসে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৬৮০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১১৫ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৮টির। আর ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫০৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা। যা গত ১৯ অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ। ১৯ অক্টোবর ডিএসইতে ১ হাজার ৬৮২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৪২ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জিনেক্স ইনফোসিসের ৮৬ কোটি ৬২ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ফার্মা।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আইএফআইসি ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, সাইফ পাওয়ার, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ডেল্টা লাইফ ইন্সুরেন্স এবং মালেক স্পিনিং।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৬৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৬টির এবং ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।