দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়ছে আমদানিকৃত পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ
শিমুল মাহমুদ : দেশে করোনা মহামারির কারণে প্রায় দুই কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। কাজ হারিছে বহু মানুষ। এর মধ্যে জ¦ালানি তেলে মূল্য বৃদ্ধিসহ সকল পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবনে।
পরিবহণে ভাড়া ২৭ শতাংশ, লঞ্চে ৩৫ শতাংশ, কৃষি উৎপাদন খরচ ৩০ শতাংশ বাড়ার শঙ্কার সঙ্গে প্রতিদিন বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, জ¦ালানি তেল একটা কৌশলীপণ্য। এর একটা বিশেষ তাৎপর্য হলো এর মূল আর্ন্তজাতিক বাজারে উঠানামা করে। কিছুদিন আগে ২৫ ডলার ছিলো এখন ৮৫ ডলার। এটা ১০০ ডলারেও যেতে পারে। এটা যেহেতু খুব বেশি আর্ন্তজাতিক বাজারে উঠানামা করে তখন আমরা এটাকে বাজারের ওপর ছেড়ে না দিয়ে যখন মূল্য কম হবে তখন একটু বেশি নেওয়া যাতে মূল্য বাড়লে মানুষের ঘারে না চাপে। মূলত এভাবে এটা পরিচালিত করা হয়।
তিনি বলেন, দেশে আমদানি করা পণ্যে বিপরিতে সরকার প্রায় ৩৪ শতাংশের মতো বিভিন্ন শুল্ক আদায় করে থাকে। সেটাকে যদি সমন্বয় করা যেতো যেটা ভারত করছে। ভারত তাদের আবগারি শুল্ক যেটা আছে সেটাকে কমিয়ে সম্বনয় করছে। তবুও কিছুটা কমানো যেতো।
আরেকটা হলো সরকারের যেসব কৌশলী পণ্য আছে বিশেষ করে জ¦ালানী ইনক্লুডিং সেটাতে গণশুনানি করা এবং তার পর সিন্ধান্ত নেওয়া। সেটা কিন্তু হয়নি।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জ¦ালানী তেলে মূল্য নির্ধারণ করতে হয় সামগ্রিক বিচার করে। আর এটা না করলে কৃষিতে আবারো ভর্তুকির প্রশ্ন উঠবে। মানুষের জীবনযাত্রার যে ব্যয় বাড়ছে এর জন্য মহার্ঘ ভাতা বাড়ার প্রশ্ন উঠবে।
মূল্য বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, গত নভেম্বরে ৮ তারিখে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৮৩ ডলার বেড়েছে। এটা যখন ৪৩ ডলার বা ৫০ ডলার ছিলো কিংবা ৬০ ডলার ছিলো তখন কিন্তু সরকার দাম বাড়ায়নি। এটা গত জানুযারি থেকে বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে নভেম্বরে এ পর্যায়ে উঠছে।
তিনি বলেন, এটা এমন না যে হঠাৎ করে বাড়িয়ে ফেলা হয়েছ। আমরা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছি। অন্তত্য ১০ মাস এটা বাড়তি ছিলো। কাজেই আমি মনে করি এটা বাড়ানোর ছাড়া বিকল্প ছিলো না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলেন গত ৭ বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি লাভ করেছে সেখান থেকে ভুর্ততি দিতে বলেন। প্রশ্ন হলো আমরা যে এর তিন গুন অতীতে লোকসান দিয়েছি। বহু বছর ধরে ক্রয় দামের চেয়ে কম মূলে বিক্রি করেছি। সেটা আমরা কেনো বিবেচনায় নেই না।
ড. শামসুল আলম বলেন, আমার শুধু বাংলাদেশেকে সামনে রেখে কথা বলছি। বিশ^ অর্থনীতিকে সামনে রেখে বলছি না। ভারতে মূল্যস্ফীতি কত, যুক্তরাষ্ট্রে-যুক্তরাজ্যে কত? কিভাবে প্রবৃদ্ধি হলো গত দুই বছরে? পন্য মূল্য বিভিন্ন দেশে কি পরিমান বাড়লো সেটার পেক্ষাপটে কেউ কথা বলছে না। এককভাবে বাংলাদেশে বললে বিষয়টা পরিষ্কার হয় না।
তিনি বলেন, তেলের দামের জন্য অন্যান্য পণ্যের মূল্য বেড়েছে এ ধারনাও সঠিক নয়। বিশ^ বাজারে ৩৮ শতাংশ বেড়েছে গমের দাম, ফুড প্রাইজ ৩১ শতাংশ গত সেপ্টম্বর থেকে অক্টেবর। সবজি বেড়েছে সাড়ে ৯ শতাংশ। ডেইরি প্রোডাক্ট বেড়েছে ২৫ শতাংশ। সূত্র : একাত্তর টিভি