সোহেল রহমান : দেশের ব্যাংক খাতে বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৪২ শতাংশই শিল্প ঋণ (মেয়াদী ও চলতি মূলধন)। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক মেয়াদী ঋণ এবং অবশিষ্ট অর্ধেক চলতি মূলধন খাতে ঋণ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংক খাতে বিতরণকৃত মোট শিল্প ঋণের ৯৯ শতাংশই বেসরকারি খাতে। এর বিপরীতে সরকারি খাতে ঋণের পরিমাণ ১ শতাংশেরও কম।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে অর্থাৎ গত জুন শেষে ব্যাংক খাতে মোট শিল্প ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে মেয়াদী ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা এবং চলতি মূলধনের পরিমাণ ২ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা।
অন্যদিকে বিতরণকৃত মোট শিল্প ঋণের মধ্যে সরকারি খাতে ঋণের পরিমাণ মাত্র ৩ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। অবশিষ্ট প্রায় ৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে বেসরকারি খাতে।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, করোনা পরিস্থিতিতেও গত অর্থবছরে ব্যাংক খাতে শিল্প ঋণ বেড়েছে। তবে ঋণ প্রবাহ বাড়লেও এর বিপরীতে আদায় তেমন উল্লেখযোগ্য নয়।
প্রাপ্ত তথ্যে মতে, ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে অর্থাৎ ২০২০ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে শিল্প ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে শিল্প ঋণ বিতরণের পরিমাণ বেড়েছে ৭৪ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা। শতকরা হিসেবে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, বর্তমানে দেশে শিল্প ঋণের পরিমাণ ব্যাংক খাতে বিতরণকৃত মোট ঋণের ৪১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। বর্তমানে দেশের ব্যাংক খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের হিসাব মতে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত) শিল্প ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল মাত্র ৯৪ হাজার ৮৪৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে, সমাপ্ত অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে (জানুয়ারী-জুন ২০২১) শিল্প ঋণ বিতরণ হয়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা, অর্থাৎ চারগুন বেড়েছে। দেশে করোনা পরিস্থিতির ক্রমশ: উন্নতি হওয়ায় শিল্প ঋণ বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট শিল্প ঋণ আদায় হয়েছে ৮৪ হাজার ২৩২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট শিল্প ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ২৬ হাজার ৩২৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।