ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধিতে হোটেল-রেস্তোরাঁয় ডালডার ব্যবহারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
মতিনুজ্জামান মিটু : ভোজ্য তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় দেশের হোটেল রেস্তোরাঁর বিরাট একটি অংশ পাম ওয়েলের সঙ্গে বেশি পরিমাণে ডালডা মিশিয়ে ব্যবহার করছে, বাড়ছে জনগণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তবে আশার কথা হচ্ছে দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকে তেল খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। এতে কিছুটা হলেও দেশের মানুষের উপকার হচ্ছে বলে পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের মৎস্য বিভাগের সদস্য পরিচালক ও পুষ্টি ইউনিটের পরিচালক ড. মো. মনিরুল ইসলাম দেশের বাজারের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বাজারে লিটার প্রতি পাম অয়েল ১৩৫ টাকায়, সুপার ১৪২ টাকা ও সোয়াবিন তেল ১৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি ডালডা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এতে দেশের হোটেল রেস্তোরায় খাবার তৈরীতে ডালডার ব্যবহার বহুগুণে বেড়ে গেছে। এই সঙ্গে বেড়েছে স্কিন ডিজিজ ও ক্যানসারসহ দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও। এ অবস্থার মুখে অনেকে তেল খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, সয়াবিন বা পামওয়েলকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ডালডা বা বনস্পতি তৈরি করা হয়। বনস্পতিতে ফ্যাটি এসিড বা ট্রান্স ফ্যাটে উপস্থিতি থাকে। এর মাত্র ২ এর বেশি হলে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতি করে।
কারণ এর মাধ্যমে হৃদরোগসহ করোনার সংক্রমণ রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে। শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাট খাদ্যের একটি বিষাক্ত উপাদান যা হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ঢাকার ডালডা নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত ২ শতাংশ মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্স ফ্যাট পেয়েছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
তেল খাওয়াকে শরীরে খারাপ কোলেস্টরেল সৃষ্টি হওয়ার জন্য করে জনৈক পুষ্টিবিদ বলেন, প্রতিটি সবজির মধ্যেই মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপযোগি তেল আছে। তাই বাইরের তেল খাবার তৈরীতে ব্যবহার করা কোন দরকার নেই। তেল ছাড়া বহু ধরণের খাবার তৈরী করা যায়। এসব খাবার খেয়ে মানুষ রোগমুক্ত থাকতে পারে।