শীতের সবজির দাম কিছুটা কমতে শুরু করলেও অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম বাড়তি
মাসুদ মিয়া : রাজধানীতে শীতের সবজির দাম কমতে শুরু করছে। সপ্তাহের ব্যবধানে শিমের দাম কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। ৫০ টাকা ৬০ টাকার মধ্যে শিম পাওয়া যাচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে শিম ছিল ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। পাশাপশি মুলা, করলার দাম কমেছে। তবে বাড়তি দামে রযেছে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম। এদিকে ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেন, একবার বাড়লেও আর কমতে চায় না। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। এক সপ্তাহ আগেও শিমের কেজি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। শিমের পাশাপাশি মুলার দামও কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া মুলা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজিতে।
শিম ও মুলার দাম কমার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী কাজল বলেন, বাজারে শিম ও মুলনার সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। সামনে দাম আরও কমবে। কয়েক দিনের মধ্যেই শিম হয়তো ৩০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাবে।
শিম-মুলার দাম কমলেও আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো ও গাজর। গত সপ্তাহের মতো পাকা টমেটোর কেজি এখন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। আর গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে।
তবে বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে বেশিরভাগ সবজির দাম। একইসঙ্গে মাছ, আলু ও পেঁয়াজের দামেও পরিবর্তন আসেনি। কিছুটা কমেছে মুরগির দাম।
ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি করছেন ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৫ থেকে ১০ টাকা। চার সপ্তাহের ব্যবধানে এ দাম কমেছে কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা। সপ্তাহ চারেক আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি ও লাল লেয়ার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সোনালী মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা।
মুরগির দাম বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, দিন যত যাচ্ছে বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ বাড়ছে। আমাদের ধারণা এ কারণেই দাম কমছে। পাইকারি বাজারে যা শুনছি, সামনে হয়তো ব্রয়লার মুরগির দাম আরও কমবে।
মুরগির দাম কমলেও সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১১৫ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহের মতো ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে পটল, বরবটি, ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। পটলের কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৪০ থেকে ৫০ টাকা এবং বাঁধাকপির পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় থাকা অন্য সবজির মধ্যে ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়া করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, মুলা শাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা আর পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকায়।
এদিন মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছও। এছাড়া শিং ও টাকি মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, শোল মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ও পাঙাস ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, নলা মাছ ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি আর চিংড়ির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে।
এবিষয়ে রায়সাহেব বাজারে ক্রেতা সুমন বলেন, অধিকাংশ নিত্যপন্যের দাম বাড়তি। বাজারে কোনো কিছুতে এখন স্বস্তির মধ্যে নেই। তিনি বলেন, চাল, ডাল, তেল, চিনি, রসুন সবকিছুর দাম অস্বাভাবিক। তিনি আরও বলেন, মুনাফালোভী কিছু ব্যবসায়ী কারসাজি করে এমন দাম বাড়াচ্ছে। যারা বাড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থায় নেওয়া উচিত। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও