১৬৪ টি চা বাগানের মধ্যে সিলেট বিভাগে রয়েছে ১৩৫ টি
জহিরুল ইসলাম : প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত এবং আবহাওয়া অনুকূল পরিবেশের কারণে এবার আশাতীত চা উৎপাদন হয়েছে। চলমান উৎপাদনের এই ধারা অব্যাহত থাকলে এবারও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন চা উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ৭ কোটি ৯৩ লাখ কেজি। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে উৎপাদন হয়েছে ৬ কোটি ৪৮ লাখ কেজি। ৯ মাসে ৮৪ ভাগ চা উৎপন্ন হয়েছে। বছর শেষে গত বছরের চেয়ে চা উৎপাদন ১ কোটি কেজি বেশি হবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ১৪০ মিলিয়ন মেট্রিকটন চা উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে সরকার। তারিইসাথে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
২০১৯ সালে ৯ কোটি কেজি চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয় তবে এবার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে দেশে ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদন হয়ে ডিসেম্বর নাগাদ আরেক রেকর্ড সৃষ্টি হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়,অনুকূল আবহাওয়া ছাড়াও বাধ্যতামূলক চা আবাদযোগ্য জমির আড়াই পার্সেন্ট হারে প্রায় প্রতিটি বাগানে চা সম্প্রসারণ,চা জমির সম্প্রসারণের বাগানগুলোতে ব্যাপক মনিটরিং ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জামের পর্যাপ্ততা, সময়মতো সার ও কীটনাশক প্রাপ্তি, ক্লোন চা গাছের ব্যবহার বৃদ্ধি হওয়া, এবং সর্বোপরি চা বোর্ডের নজরদারির কারণে এবার দেশের চা উৎপাদন বেড়েছে।
বর্তমানে নিবন্ধিত ১৬৪ টি চা বাগানের মধ্যে বৃহত্তর সিলেট বিভাগে রয়েছে ১৩৫ টি। এবার অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় এখনো চা গাছের কুঁড়ি গজাচ্ছে। এবার মৌসুমের শেষ দিকেও সিলেটের বাগানগুলোতে শ্রমিকরা পাতি তুলছেন মহাখুশিতে। তবে চায়ের উৎপাদন ভাল হলেও বাজার মূল্য প্রতি কেজি মাত্র ১৯০-২০০ টাকা। ফলে উৎপাদন ভাল হলেও বিক্রয় মূল্য বেশি না পাওয়ায় কিছুটা হতাশ চা বাগান সংশ্লিষ্টরা।
সিলেটের জাফলং চা বাগানের ব্যবস্থাপক সানাউল হক জানান, গত বছর আমাদের বাগানে প্রায় এক লাখ কেজি বেশি চা উৎপাদন হয়েছে। বাগানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে উৎপাদন আরো বাড়ানো সম্ভব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উৎপাদন বাড়লেও সিন্ডিকেটের কারণে নিলাম বাজারে চায়ের দাম কমে যাচ্ছে। এতে মালিকপক্ষ বাগান চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। অন্যদিকে চোরাই পথে নি¤œমানের ভারতীয় চা পাতা দেশীয় পাতার সঙ্গে মিশ্রণ করে বাজারজাত করা য় চা শিল্পের ক্ষতি হচ্ছে।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের(পিডিইউ) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক জানান, এবার অতীতের চা উৎপাদনের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৪ দশমিক ১৪ মিলিয়ন কেজি। বর্তমানে চায়ের জন্য অত্যন্ত সুন্দর প্রাকৃতিক অবস্থা বিরাজ করছে। অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশ, প্রয়োজনীয় বৃষ্টির এই ধারাবাহিকতা চলমান থাকলে এবারও লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি চা উৎপন্ন হবে।