এবার আমন ধানের ফলন ভালো
অর্থনীতি ডেস্ক : দেশের গ্রামীণ জনপদে ছড়িয়ে পড়েছে পাকা আমনের গন্ধ। উৎসবের আবহে কৃষকের সঙ্গে ধান কাটায় যোগ দিয়েছেন পরিবারের অন্য সদস্যরাও। ফসলের মাঠে চলছে আমন ধান কাটার উৎসব।
এখন পর্যন্ত ৩৩ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। চলছে আমনের মাড়াই কার্যক্রম। এবার আমনের উৎপাদন বেশ ভালো হয়েছে। ধানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। হাজার টাকা মণে ধান বিক্রি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরও এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আমনের উৎপাদন বেশি হওয়ার প্রত্যাশা করছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ বলেন, এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যেই এক তৃতীয়ংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আমানের আবাদ বেশি হয়েছে। আশা করছি উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, উৎপাদনও তারচেয়ে বেশি হবে।
তিনি বলেন, এবার আমন চাষে ১ লাখ ৭৫ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল। নতুন জাতে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। হাইব্রিড আবাদে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। তাই এবার ফসলের উৎপাদন ভালো হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫ লাখ ৫৭ হাজার হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮১২ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ১১ শতাংশ বেশি জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাটা হয়েছে ১৮ লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ হেক্টর জমির ধান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমনের উৎপাদন ভালো হয়েছে। এবার আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫২ হাজার ২২০ টন। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এবার উৎপাদন বেশি হতে পারে। ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার কৃষক মোস্তফা বলেন, পুরোদমে মাঠে এখন আমন ধান কাটা চলছে। ধান কেটে মাঠেই রাখা হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেতের ধান বাড়ির উঠানে উঠানো হচ্ছে। অন্যবারের তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধানের দামও ভালো। হাজার টাকা মণে ধান বিক্রি হচ্ছে।
প্রায় অভিন্ন তথ্য জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার হরশী গ্রামের কৃষক হিমেল। তিনি বলেন, আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে মাড়াই এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি।
যেসব জমির ধান উঠেছে সেখানে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। উনপঞ্চাশ ধান হাজার টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। আর হাইব্রিড ধান বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা মণে।
জানতে চাইলে নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার চন্দনপুর গ্রামের কৃষক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ধান কাটা শেষ করেছি। ক্ষেতেই রাখা হয়েছে। কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ায় আমনের উৎপাদন ভালো হয়েছে। আমাদের এখানে ৪৮ কেজির মণপ্রতি ধান বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। ধানের দামও ভালো রয়েছে। নীলফামারীর কৃষক দৃজেনও একই রকম তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের এখানে বস্তা (৭৫ কেজি) ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধানের দাম মোটামুটি ভালো আছে। সূত্র : সারাবাংলা, বাংলানিউজ। গ্রন্থনা : শোভন দত্ত