গাছ লাগানোই জীবনের ধ্যান-জ্ঞান দিনাজপুরে বৃক্ষপ্রেমী আকতার হামিদের
অর্থনীতি ডেস্ক : স্বল্প পরিসর জীবনে মানুষের নানাবিধ শখ থাকে। আর সেই শখের কাজটি পুরণ হলেই মানুষ আনন্দে উৎবেলিত হয়। সরকারি চাকরিজীবি আকতার হামিদের শখটি একটি ভিন্ন রকম। তার জীবনে একমাত্র শখ এবং সকল আনন্দ নিয়োজিত গাছ লাগানোর মধ্েয।
দিনাজপুর শহরের উত্তর বালুবাড়ীর বাসিন্দা সরকারি চাকরিজীবি বৃক্ষপ্রেমী মো. আকতার হামিদ। তিনি নানা প্রজাতির গাছ, তাল, ফলদ-বনজ গাছ লাগানোই জীবনে সবচেয়ে বড় এবং একমাত্র শখ বলে মনে করেন।
আকতার হামিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছুটির দিনে বা অবসর সময় পেলেই তিনি গাছ লাগানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তিনি ছোট বেলা থেকেই বাবা-মার কাছ থেকেই গাছ লাগানোর উৎসাহ পেয়েছেন। ছোট বেলা থেকেই বাবার সঙ্গে বাড়ির পার্শ্বে ফাঁকা জায়গায়, পুকুর পাড়ে তাল, কড়ই, বাঁশ, বরই, বেল, আম, কাঁঠাল, লেবু এবং সৌন্দর্যবর্ধক বিভিন্ন চারা লাগিয়েছেন।
যা এখনও দৃশ্যমান রয়েছে এবং কিছু গাছ দিয়ে বাড়ির আসবাবপত্রও তৈরি করেছেন। যেখান থেকে গাছ কেটেছেন সেখানে পুনরায় গাছ লাগিয়ে দিয়েছেন। গাছ লাগানো যেন তার আত্মার সাথে অন্তঃনিহিত।
তিনি আরও জানান, যেখানেই চাকরির সুবাদে গিয়েছেন, যে বাসায় ভাড়া থেকেছেন, সেখানেই গাছ লাগিয়েছেন। ১০ বছর পূর্বে যেখানে ফল গাছ লাগিয়েছেন সেখানেই গিয়ে সেই গাছের ফল খেয়েছেন। নিজে গাছ লাগিয়ে সেই গাছের ফল খাওয়ার আনন্দ ও মজাটাই অন্যরকম। বৈচিত্র্যময় এই আনন্দ যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। উপলব্ধি করতে হবে মাত্র।
দিনাজপুরে এসেও সেই গাছ লাগানোর কাজটি ভুলে যাননি। যথারীতি সদরের বিভিন্ন সরকারি জায়গায় যেমন- রামসাগর জাতীয় উদ্যানের আগে প্রধান রাস্তায়, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আগে ডাম্পিং এরিয়া থেকে পূর্ব দিকে, শিশু পার্কের পুকুর পাড়ে, শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের ধারে তালসহ বিভিন্ন গাছ রোপন করেছেন। অনেককে তিনি ফল ও ফুলের চারা উপহার দিয়েছেন। তিনি তার সন্তানদের কোন কোন জায়গায় তাল গাছ লাগিয়েছেন তা জানিয়েছেন। কারণ তার অবর্তমানে তার সন্তানরা সেই গাছের মধ্েয তার বাবার স্মৃতি খুঁজে পাবেন।
তাছাড়া যেসব গাছ আখতার হামিদ লাগিয়েছেন তা কিছুটা হলেও জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব থেকে পরিবেশকে রক্ষা করবে। এর পাশাপাশি মানব কল্যাণ ও সৌন্দর্য্য বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এছাড়া তিনি গাছ লাগানোর একটা সুন্দর ধারণাও দিয়েছেন তা হলো- বট, পাকুর গাছের ডাল দিয়েও গাছ হয়ে যায় যেমন ৮-১০ইঞ্চি মোটা এবং ৭-৮ফিট লম্বা বট। পাকুর গাছের ডাল রাস্তার কোন ফাঁকা জায়গায় লাগালেই গাছ হয়ে যাবে। যা এক সময় মানুষের বিশ্রামাগার হবে। পশু-পাখির বাসা হবে এবং ফল পাবে। মানুষের যাতায়াত বাড়বে এবং সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে।
আসলে গাছ আমাদের জীবনের সাথে অতঃপ্রতভাবে জড়িত। আকতার হামিদের গাছ লাগানোর এই অনুপ্রেরণা আমাদের সকলের জীবনের পাথেয় হয়ে থাক এটাই প্রত্যাশা। সূত্র: ঢাকা টাইমস