শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার ব্যাপক দর পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই নিয়ে টানা চার কার্যদিবস পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এদিন শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। সূচকের সাথে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর এবং টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর প্রধান সূচক ৯৫ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমেগেছে।
এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, যখন শেয়ারবাজার একটু ভালোর দিকে যায় তখন কেন্দ্রী ব্যাংকের অযাচিত হস্তক্ষেপ করে সে কারনে দরপতন হচ্ছে। আর বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে শেয়ার বিক্র করে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে শেয়ারবাজারে জন্য কোন ভুল সিধান্ত না নেওয়া। সংশ্লিষ্টরা, তারা মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোনালী ব্যাংকে ১০ লাখ টাকা জরিমান খরবে গতকাল শেয়ারবাজারে বড় পতন হয়েছে। এদিকে কিছুদিন আগে সোনালী ব্যাংক শেয়ারবাজারে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা যানায়।
এবিষয়ে ডিএসইর এক পরিচালক বলেন, এখন এমন কোনো কারণ দেখছি না যে শেয়ারবাজারে দরপতন ঘটবে। এভাবে দরপতন হলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, এই দরপতনের আগে বাজার কিন্তু অনেকটাই উঠেছে। সুতরাং বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ হয়তো এখন প্রফিট টেকিং করছেন। ফলে বিক্রির চাপ বাড়ায় দরপতন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শেয়ারবাজার খুবই সেনসিটিভ। যেকোন বিষয় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আর কোনো কারণে বাজারে একটু দরপতন হলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক দেখা দেয়। সবাই তখন বিক্রি করতে চায়। এতে বিক্রির চাপ বেড়ে গিয়ে পতনের মাত্রা বেড়ে যায়। এখনো হয়তো সেটাই হচ্ছে। এদিকে টানা দরপতনের সঙ্গে শেয়ারবাজারে লেনদেনের গতিও কমে গেছে।
এবিষয়ে বিনিয়োগকারী হাছান মাহামুদ বলেন, যখন শেয়ারবাজার একটু ভালোর দিকে যায় তখন কেন্দ্রী ব্যাংক হস্তক্ষেপ করে তখনই বাজারে দরপতন শুরু হয়। আর বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে শেয়ার বিক্র করে দেয়। হাছান আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে দেখা যাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্থ না হয় এমন কোন সিধান্ত নেওয়া। গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯৫.০৮ পয়েন্ট বা ১.৩৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৯১৭.৯১ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৬.৫৭ বা ১.১২ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৯.৪৮ পয়েন্ট বা ১.১০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪৫২ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৬৩১.৩৭ পয়েন্টে।
ডিএসইতে এক হাজার ১২৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৮৫ কোটি ৫ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৩১৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার।
ডিএসইতে ৩৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৭২টির বা ১৯.৮৯ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ২৫৯টির বা ৭১.৫৪ শতাংশের এবং ৩১টির বা ৮.৫৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:-ওয়ান ব্যাংক, বেক্সিমকো লিঃ, আইএফআইসি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক,ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, সাইফ পাওয়ার,এনআরবিসি ব্যাংক,[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ ংঃধৎঃ: }থএড়ইধপশ[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ বহফ: }থএড়ইধপশফরচুন সুজ,বেক্সিমকো ফার্মা।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো: সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, একমি পেস্টিসাইড, সেনা কল্যান ইন্স্যুরেন্স, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, এম আই সিমেন্ট, আইসিবি সোনালী ওয়ান মিঃ ফাঃ, প্যাসিফিক ডেনিমস, অগ্নি সিস্টেমস, এনভয় টেক্সটাইল ও সোনালী পেপার।
অন্যদিকে দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:-এল আর গ্লোবাল মিচ্যুয়াল ফান্ড, কাট্টালী টেক্সটাইল, প্রিমিয়ার লিজিং, জেমিনী সী ফুড, হামিদ ফেব্রিক্স, তমিজুদ্দীন টেক্সটাইল, বিআইএফসি, এডিএন টেলিকম, ফিনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও আইএফআইসি ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৪৬.১২ পয়েন্ট বা ১.১৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ২৬৯.৭৬ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ২৮৫টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৭টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৭১টির আর ২৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৫৮ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।