পুলিশের ছুটি বাতিল গুজব ঠেকাতে সতর্ক থাকার নির্দেশ
সুজন কৈরী : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও ইউপি নির্বাচন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে যাতে কেউ নাশকতা করতে না পারে সেজন্য পুলিশকে সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে মৌখিক এ বার্তা দেওয়া হয়।
ডিএমপির একজন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সমমর্যাদার কর্মকর্তা বলেন, কেউ যাতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, সে জন্য সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এই বার্তা পেয়েই সদর দপ্তর থেকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটকে মৌখিকভাবে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে কনস্টেবল থেকে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা ছুটিতে আছেন তাদের ছুটি বাতিল করে ২৪ নভেম্বরের মধ্যে কর্মস্থলে ফেরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, মাতৃত্বকালীন, অন্তঃসত্ত্বা জনিত ও শারীরিক অসুস্থতা ছাড়া অন্য যেসব কারণে কর্মকর্তারা ছুটি নিয়েছেন তাদের বুধবারের মধ্যে কর্মস্থলে ফিরতে হবে। কেউ বুধবার ফিরে না এলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান বলেন, পুলিশ সদস্যদের সবসময়ই সতর্ক অবস্থানে থাকতে বলা হয়। আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। নির্বাচনে আবারও যেন কোনো সহিংসতা না হয়, এ জন্য পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। একইভাবে রাজধানীতেও যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো ব্যত্যয় না ঘটে, সে জন্য পুলিশ সদস্যদের টহল ও নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। এটি পুলিশের একটি চলমান প্রক্রিয়া। কাউকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।
ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে আদালত বন্ধ ছিলো। বর্তমানে আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ায় ওয়ারেন্ট বেড়েছে এবং রিসিভ করছি আমরা। ফলে আমাদের বিশেষ ওয়ারেন্ট অভিযানে যেতে হয়। বুধবার থেকেই আমরা ওয়ারেন্ট অভিযান শুরু করেছি। এছাড়া শীতের সময় চুরি ও ছিনতাই বেড়ে যায়। তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাসে অনেক রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম আছে এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রয়েছে। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ অফিসারদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চাই।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১৬ নভেম্বর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত এক সপ্তাহে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের বিশেষ অভিযানে ২ হাজার ৯৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানকালে ১১ লাখ ২৫ হাজার ৩২৮ পিস ইয়াবা, ৫ কেজি ২৩০ গ্রাম হেরোইন, ৮ হাজার ৮৩২ বোতল ফেন্সিডিল, ১ হাজার ৫৯০ লিটার বিদেশি মদ, ১০ হাজার ৫১ লিটার দেশি মদ ও দেড় হাজার কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়েছে। একই সময়ে অভিযান চালিয়ে ৪৫টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫২৫টি দেশীয় অস্ত্র ও ৫৭টি বিস্ফোরকদ্রব্যসহ ৯৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া অভিযানকালে নিবন্ধনহীন ৩ হাজার ১৪০টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। চোরাই ৩৬টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ৯৮টি। গ্রেপ্তার করা হয় পাঁচজনকে।