‘ওমিক্রন’ ঝড়ে বিশ্ব শেয়ারবাজারে ধস
রাশিদ রিয়াজ : গত এক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে শেয়ারবাজারের লেনেদেনে সবচেয়ে খারাপ সময় গেলে ডাও সূচক ৯০৫ পয়েন্ট হ্রাস (২.৫ শতাংশ) পায়। এদিন এসএন্ডপি ৫০০ সূচকেও গত ফেব্রুয়ারির পর থেকে সবচেয়ে খারাপ কাটে এবং ২.৩ শতাংশ কমে যায় বাজার দর। নাসডাক কম্পোজিট গত সেপ্টেম্বরের পর সবচেয়ে বেশি পতন ঘটে অর্থাৎ এ বাজারে সূচক পতন ঘটে ২.২ শতাংশ। সিএনএন
বিমানসংস্থাগুলোর স্টক এবং অন্যান্য ভ্রমণ সংক্রান্ত খাতে বেশি সূচকের পতন হয়। কারণ তেলের দরেও ব্যাপক পতন ঘটে। তেলের চাহিদা বিপুলভাবে কমে যেতে পারে এয়ারলাইন্সগুলো ফের বসে যেতে পারে এ আশঙ্কায়। একই সঙ্গে গত ১৭ মাসের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ দিন ছিল ইউরোপিয় স্টকের। ক্রুজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কার্নিভ্যাল করপোরেশন, রয়েল ক্যারিবিয়ান ক্রুজেস এবং নরওয়েজিয়ান ক্রুজ লাইনের প্রতিটির দরপতন হয়েছে শতকরা ১০ ভাগের বেশি। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, ডেল্টা এয়ারলাইন্স এবং আমেরিকান এয়ারলাইন্সেরও শেয়ার মূল্য প্রায় একই পরিমাণে কমে গেছে।
ভারতে পেটিএমের শেয়ার প্রথম দিনেই বাজারে ধস নামে। ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং (আইপিও) এর মাধ্যমে পেটিএম ১৮ হাজার কোটি রুপির শেয়ার ছেড়েছিল বাজারে। দিন দশেক আগে শুরু হয়েছিল সাবস্ক্রিপশন। কিন্তু শনিবার স্টক মার্কেটের তালিকাভুক্ত হতেই বড় ক্ষতির মুখে পড়ল পেটিএম। হুড়মুড়িয়ে পড়ে গেল শেয়ারদর। প্রথমে ৯.৩ শতাংশ নামার পরে ২৩ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যায় দাম। অথচ পেটিএমের শেয়ারের দিকে নজর ছিল অনেকেরই। ধারণা করা হয়েছিল, ভারতের কর্পোরেট ইতিহাসে সম্ভবত পেটিএমের আইপিও-ই সবচেয়ে বড় অঙ্কের হতে চলেছে। এক দশকের বেশি সময় আগে কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড শেয়ার বেচে ১৫ হাজার কোটি রুপির ওপর তুলেছিল। সেই রেকর্ড হয়তো ভেঙে যেতে পারে, মনে করেছিলেন অনেকেই। পেটিএমের শেয়ার পিছু দাম রাখা হয়েছিল ২০৮০ থেকে ২১৫০ টাকা। খুচরো বিনিয়োগকারীরা ন্যূনতম এক লটে ৬টি শেয়ার থেকে সর্বোচ্চ ১৫টি লটে কিনতে পারবেন বলা হয়েছিল। আপার প্রাইস ব্র্যান্ডে এক লট শেয়ারের দাম হয় ১২ হাজার ৯শ রুপি। কোম্পানি এই বিনিয়োগ থেকে ১৮ হাজার ৩০০ কোটি রুপি পর্যন্ত আয় করতে পারে বলে মনে করা হয়েছিল।
কিন্তু এদিন সকালে ১৯৫০ দিয়ে শুরু হয়ে, সকাল দশটাতেই শেয়ারের দাম পড়ে যায় ১৭৭৭.৫০ রুপিতে। এর পরে তা আরও নেমে হয় ১৬৫৫ টাকা। ফলে এত ধুমধাম করে আইপিও-র মাধ্যমে শেয়ার ছেড়েও আশানুরূপ লাভ তো হলই না, উল্টে ক্ষতির মুখে পড়ল পেটিএম। একই সঙ্গে ভারতে
আইপিও-র মাধ্যমে এ বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত টিপিজি-মদতপুষ্ট নায়কা, অয়ো হোটেলস অ্যান্ড রুমস, অনলাইন বিমা এগ্রিগেটর সংস্থা পলিসিবাজার সহ ১৫৭টি কোম্পানি ১৭.২২ বিলিয়ন ডলার তুলেছে। গত বছর একই সময় পর্যন্ত ৪৯টি কোম্পানি তুলেছিল ৮.৫৪ বিলিয়ন ডলার। এসবের পরেই পেটিএম-সহ একাধিক কোম্পানি আইপিও-তে পা রাখে।