ব্যয় হবে ২ হাজার ৮৭৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ পাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি
সোহেল রহমান : চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। টার্নকি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান ‘তাইইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে প্রায় ২ হাজার ৮৭৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র আগামী সভায় এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
প্রকল্পের আওতায় যেসব কাজ করা হবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেÑ চট্রগ্রামের উত্তর-মধ্য হালিশহর এবং সংলগ্ন এলাকায় ১০০ এমএলডি ক্ষমতার পয়ঃশোধনাগার স্থাপন, ৩০০ ঘনমিটার ক্ষমতার ফেসিয়াল সলাজ শোধনাগার স্থাপন এবং ৯০ কিলোমিটার পয়ঃপাইপলাইনের ডিজাইন, নির্মাণ, সরবরাহ, স্থাপন ও কমিশনিং।
জানা যায়, চট্রগ্রাম মহানগরীর জনগণকে আধুনিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার আওতায় আনার জন্য পুরো মহানগরে পরিকল্পিত স্যানিটেশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করেছে চট্রগ্রাম ওয়াসা। মাস্টার প্ল্যানে চট্রগ্রাম মহানগরীকে মোট ছয়টি ক্যাচমেন্টে ভাগ করা হয়েছে এবং প্রতিটি ক্যাচমেন্টের জন্য ১টি পয়ঃশোধনাগার নির্মাণের সুপারিশ রয়েছে। এছাড়াও দুটি ফেসিয়াল সলাজ শোধনাগার নির্মাণের সুপারিশ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে চট্রগ্রাম মহানগরীর হালিশহর এবং সংলগ্ন এলাকার জন্য শতভাগ পরিবেশবান্ধব স্যানিটেশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্প (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)-এর ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় অনুমোদিত হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে একই বছর ২৩ ডিসেম্বর তারিখে প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত ডিপিপি অনুসারে প্রকল্পের প্রাক্কলিত মোট ব্যয় প্রায় ৩ হাজার ৮০৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। প্রকল্পের সুফল হিসেবে প্রায় ২০ লাখ জনগণকে উন্নত পয়ঃব্যবস্থার আওতায় আনা সম্ভব হবে। প্রকল্পের আওতায় হালিশহর ক্যাচমেন্ট এলাকায় পয়ঃনিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দরপত্র আহবান করা হলে ৪০টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র ক্রয় করে। এর মধ্যে ৬টি দরপত্র জমা পড়ে। এতে চীনের ৪টি, হংকংয়ের ১টি ও দক্ষিণ কোরিয়ার ১ প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ নেয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাই করে দক্ষিণ কোরিয়ার ‘তাইইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড’-কে রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচিত করে। কারিগরি মূল্যায়নেও ‘তাইইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড’ কর্তৃক দাখিল করা দরপত্র রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচিত হয়।
সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক প্রস্তাব ভ্যাট ও এআইটিসহ ২ হাজার ৬২৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং বিদেশ থেকে আমদানিযোগ্য মালামালের সিডি ভ্যাট বাবদ ২৫০ কোটি টাকাসহ ২ হাজার ৮৭৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সম্পাদনা : ভিকটর রোজারিও