ইউরোপ অভিবাসন : দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন অভিবাসন প্রত্যাশীরা
অর্থনীতি ডেস্ক : উন্নত জীবন আর নিরাপত্তার আশায় ইউরোপ যাত্রায় দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন অভিবাসন প্রত্যাশীরা। ইউরোপে ঢুকতে গিয়ে বেলারুশ-পোল্যান্ড প্রচ- ঠা-ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে কয়েক হাজার মানুষ। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে অপেক্ষারত এসব মানুষের ফেরার কোন পথ নেই। ডিবিসি টিভি
সিরিয়ার দুই বন্ধু আনাস কানান ও মঈন আল হাদিকে দালাল বলেছিল, মাথাপিছু ৩ লাখ টাকা দিলে তাদের বেলারুশ থেকে জার্মানি পৌঁছে দেবে। রাজনৈতিক আশ্রয় পাবে দুজনই। কিন্তু এক পর্যায়ে বেলারুশ সীমান্তে দুজনকেই ফেলে যায় দালাল। কয়েক সপ্তাহ ধরে পোল্যান্ড- বেলারুশ সীমান্তে তীব্র শীতে মানবেতর জীবনযাপন করছে দুই সিরিয়ান। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যত।
অভিবাসন প্রত্যাশীরা জানান, দালাল শুধু টাকা চায় আর মিথ্যা কথা বলে। শেষমেষ এমন জায়গায় এসে ছেড়ে যায়, যেখানে মৃত্যু ছাড়া সামনে আর কিছুই থাকে না । পরে পোলিশ সীমান্ত রক্ষী আনাস ও মঈনসহ বেশ কয়েকজনকে বন্দিশালায় নিয়ে যায়।
ইউরোপে প্রবেশ করতে কয়েক মাস ধরে বেলারুশ সীমান্তে অপেক্ষায় হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিযোগ, ইউরোপকে অস্থিতিশীল করতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের বেপরোয়া যাত্রায় উৎসাহ দিচ্ছে বেলারুশ।
আর পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে রাশিয়া। অভিযোগ অস্বীকার করে বেলারুশ সীমান্তে অস্থিরতার জন্য পাল্টা দায় দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে অভিবাসন প্রত্যাশীদের ভাগ্যে নেমে আসছে আরও দুর্ভোগ। কারণ পূর্ব ইউরোপের সব দেশই কড়াকড়ি আরোপ করেছে সীমান্তে।
আনাস-মঈনের মতই দুর্ভাগ্যের শিকার আরেক সিরিয়ান খালেদ জেইন আল দীন। যুদ্ধ আর সংঘাত থেকে বাঁচতে প্রায় ২০ লাখ টাকা দেয় দালালকে। কথা ছিল খালেদের পুরো পরিবারকে ইউরোপে পুনর্বাসন করে দেয়া হবে। কিন্তু তাদেরও একইভাবে সীমান্তে ফেলে যায় পাচারকারীরা। পরে কোনরকমে মানবাধিকার কর্মীদের সহায়তায় আশ্রয় মেলে পোল্যান্ডে। সিরীয় শরণার্থী খালেদ জেইন আল দীন বলেন, প্রতারকদের কাছে আমরা মানুষ না । ওদের চোখে আমরা হচ্ছি লাখ লাখ টাকা।
আমাদের নিয়ে ব্যবসা করাই ওদের আসল উদ্দেশ্য। যেভাবে পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে, সামনে শরণার্থীদের এখানে আসা আরও কঠিন হয়ে পড়বে। আনাস, মঈন কিংবা খালেদের মতো বহু অভিবাসন প্রত্যাশীর গল্প একইরকম। ভূরাজনৈতিক খেলায় যারা হারিয়েছে সর্বস্ব। উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপ যেতে চেয়েও হয়েছেন প্রতারণার শিকার। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ