৫ কার্যদিবস পর শেয়ারবাজারে বড় দরপতন
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার টানা ৫ কার্যদিবস সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর বুধবার সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ পাশাপাশি অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দামও কমেছে। এদিকে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, শেয়ারবাজার নিয়ে মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) প্রতিনিধিদের বৈঠককে সমাধান আসতে পারে বলে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনেক আশা তৈরী হয়েছিল।
বৈঠকে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বন্ডকে এক্সপোজার লিমিটেডের বাইরে রাখা ও বাজারদরের পরিবর্তে শেয়ারের কেনা দামকে এক্সপোজারে লিমিটে গণনা করা হবে, এমন ঘোষণা আসবে। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এমন খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করায় বড় দরপতন হয়েছে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুর পাঁচ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪১ পয়েন্ট পড়ে যায়। লেনদেনের শেষদিকে পতনের মাত্রা আরও বাড়ে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৯৬ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৯৫২ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমলো।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ১৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৩৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৬২১ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৯৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৭টির। আর ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৫২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৩৩১ কোটি ৪ লাখ টাকা। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৭৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
টাকার অংকে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৯৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের ৪৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জিএসপি ফাইন্যান্স।
এছাড়াও ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওয়ান ব্যাংক, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোনালী পেপার, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, পাওয়ার গ্রিড ও অ্যাকটিভ ফাইন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৫০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৩ কোটি টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৪টির ও ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।