তিন কার্যদিবস পর শেয়ারবাজারে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলেও লেনদেনের খরা
মাসুদ মিয়া : দেশের শেয়ারবাজার টানা তিন কার্যদিবস পতনের পর গতকাল বুধবার উত্থানে ফিরেছে। এদিন শেয়ারবাজারের সব সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলেও লেনদেনের খরা দেখা দিয়েছে। টাকার পরিমাণে লেনদেন আগের কার্যদিবস থেকে কমে আবারও হাজার কোটি টাকার নিচে নেমেছে। তবে বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর।
এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, তিন কার্যদিবস পর শেয়ারবাজারে সূচক বেড়েছে এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক। এবিষয়ে ডিএসইর এক পরিচালক বলেন, ডিসেম্বর মাস ক্লোজিং মাস এই মাসে শেয়ারবাজার উঠানামা বেশি করে। জানুয়ারি মাসে শেয়ারবাজার ঠিক হয়ে যাবে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির এই দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সাম্প্রতিককালে কিছু দূরত্ব ও মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। যে কারণে শেয়ারবাজারে হঠাৎ করে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুর দিকে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। ফলে লেনদেন শুরুর ৩০ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
কিন্তু এর পরেই ছন্দপতন ঘটে। হঠাৎ করেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হতে থাকে। ফলে বেলা ১১টা ৭ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১৩ পয়েন্ট পড়ে যায়। এরপর কয়েক দফা সূচকের উত্থান-পতন চলতে থাকে। তবে, লেনদেনের শেষদিকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। ফলে সূচকের উত্থান দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩০ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৮৬৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর আগে টানা তিন কার্যদিবসের পতনে এ সূচকটি কমে ১৪৬ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বেড়েছে অপর দুই সূচক। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৫৮৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮০৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৮০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৭৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
টাকার অংকে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১২৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফরচুন সুজের ৪৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৬ কোটি ৬৩ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওয়ান ব্যাংক। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জিনেক্স ইনফোসিস, সোনালী পেপার, অ্যাক্টিভ ফাইন, জিএসপি ফাইন্যান্সের, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লিন্ডে বিডি এবং আইএফআইসি ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৯০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৫৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৪টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।