সোহেল রহমান : চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সোমবার সচিবালয়ে ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিং তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রসঙ্গত: চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে যে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ সবসময় এ বিষয়ে একটু অন্যরকম। তবে ভালো খবর হলো যে, আমরা ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারব। সব খাতেই আমাদের প্রবৃদ্ধি ভালো হচ্ছে। রপ্তানি বাড়ছে, আমদানিও বাড়ছে। অর্থনীতি গতিশীল হচ্ছে। কাজেই যেভাবে অর্থনীতি এগোচ্ছে, তাতে আশা করা যাচ্ছে অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ হবে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, নভেম্বরে রেমিট্যান্স কিছুটা কম হয়েছে। তবে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ দেখছি না। সামনে দুটি ঈদ আছে। তখন আরও বেশি রেমিটেন্স আসবে। রেমিট্যান্স আসার যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, এ ধারা অব্যাহত থাকলে বছর শেষে ২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ৫০ বছরে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে। ১০০ বিলিয়ন ডলার জিডিপি অর্জন করতে ৩৮ বছর লেগেছে। বাকি ১২ বছরে ৪১ বিলিয়ন ডলার অর্জিত হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে দেশ। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের কাতারে পৌঁছানো। আমরা যেভাবে এগোচ্ছি, ইনশাআল্লাহ কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।
পুঁজিবাজার সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি, পুঁজিবাজার সঠিক স্থানেই আছে। আর ‘রোড শো’ করা হয় বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে তুলে ধরার জন্য। রোড শো’র আউটকাম তো আছেই। তবে এর সঙ্গে পুঁজিবাজারের কোনো সম্পর্ক নেই। ক্রয় কমিটির বৈঠকে পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তক ট্যাবলেট ক্রয়ের একটি প্রস্তাব ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে তৈরি করা জিনিস আমরা ব্যবহার করতে চাই। সেজন্য আমরা সময় বেশি নিচ্ছি। কারণ ‘মেড-ইন-বাংলাদেশ’ ইজ এ কনসেপ্ট, ইজ এ ফিলোসফি। আগামী ৫০ বছরকে সামনে রেখে আমরা কিন্তু এ ধরনের ফিলোসফি ধারণ করছি। আমরা ইম্পোর্ট করে আনলে সহজেই করা যায়।
কিন্তু আমরা ইম্পোর্টেড প্রোডাক্ট দেখতে চাই না। আমাদের দেশে যারা সক্ষম এগুলো তৈরির জন্য তাদের সুযোগ দিতে হবে। সে জন্যই সময় বেশি লাগছে। যাতে ভুল ভ্রান্তি না হয় সেটি দেখা। দেশীয় কোম্পানিকেই দিতে চাচ্ছি। আমরা চাই যেসব জিনিস দেশে তৈরি হয় সেগুলো আমরা বিদেশ থেকে কম ব্যবহার করবো। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো। আমরা দেখতে চাই আমরা কোন জায়গায় পৌঁছাতে পারি।