৭ দিনের মধ্যে ই-কমার্স মামলার তথ্য চেয়েছে কারিগরি কমিটি
মো. আখতারুজ্জামান : দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সকল মামলার তথ্য আগামী সাত দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জানাতে পুলিশ সদর দপ্তরকে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সমন্বয়ক এএইচএম সফিকুজ্জামান।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ই-কমার্স নিয়ে সরকার গঠিত কারিগরি কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ই-কমার্সে পণ্য কিনতে গিয়ে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে পড়া গ্রাহকের টাকা ছাড় করতে পুলিশের কাছে এ সংক্রান্ত মামলার তথ্য চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই সেসব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের বকেয়া অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ফেরত দেয়া হবে। এ কারণেই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে সকল মামলার তথ্য আগামী সাত দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জানাতে পুলিশ সদর দপ্তরকে বলা হয়েছে।
সেই তথ্যের ভিত্তিতে পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে গ্রাহকদের টাকা ফেরতের নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংক দেবে বলেও জানান তিনি। বৈঠকে জানানো হয়, বর্তমানে পেমেন্ট গেটওয়েগুলোতে গ্রাহকদের প্রায় ২০০ কোটি টাকার মতো আটকে আছে।
এর আগে অগ্রিম অর্থ দেওয়ার পর পণ্য বুঝে না পাওয়ার ব্যাপক অভিযোগ ওঠার পর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা ঠেকাতে পদক্ষেপ নিতে এসক্রো সিস্টেম চালুর সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ ব্যবস্থায় গ্রাহকের পণ্য বুঝে পাওয়া নিশ্চিত না হলে গ্রাহকের অর্থ ই-কমার্সের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা না হয়ে তা পেমেন্ট গেটওয়ে সেবাদানকারীদের কাছে রক্ষিত থাকবে বলে গত জুলাই মাসে নির্দেশনা জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর ই-কমার্সের নামে প্রতারণা অনেকাংশেই সঙ্কুচিত হতে থাকে। এ সময়ের পর থেকে গ্রাহক পণ্য বুঝে পেয়েছে নিশ্চিত হওয়ার পরই পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে অর্থ বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসার পর একের পর এক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের মামলা, গোয়েন্দা ও আইন শৃংখলা বাহিনীর তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, কিউকম, দালাল প্লাসসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চেক জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন, অনেকে গেছেন আত্মগোপনে।
পরিশোধ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা থাকা ডিজিটাল কমার্স লেনদেনের অর্থ সংশ্লিষ্ট ভোক্তাদের ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়, যেসব ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা চলমান নেই, সেসব প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিশোধিত অর্থের মধ্যে আপনাদের কাছে জমা থাকা অর্থ সংশ্লিষ্ট ভোক্তাদের তথ্যাদি যাচাইকরণ পূর্বক ফেরত প্রদানের অনুরোধ করা হল। সম্প্রতি কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া আলেশা মার্ট ওই সময় দাবি করেছিল, পেমেন্টে গেটওয়েতে তাদের ৫০ কোটি টাকা আটকা রয়েছে যা হাতে পেলে তারা গ্রাহকের পাওনা অনেকাংশেই পরিশোধ করতে সক্ষম হবে। অন্য অনেক প্রতিষ্ঠানও তাদের শত কোটি টাকা পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকা রয়েছে দাবি করে।