আফগানিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে ভেঙে দিয়েছে তালেবান সরকার
অর্থনীতি ডেস্ক : পশ্চিমা-সমর্থিত প্রশাসনের অধীনে আফগানিস্তানে এ কমিশনের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো বলছেন তারা। তালেবান সরকারের এক মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্বাধীন নির্বাচন কমিশন (আইইসি) সম্পর্কে স্থানীয় সময় শনিবার তালেবান সরকারের মুখপাত্র বিলাল কারিমি বলেন, এ ধরনের কমিশন থাকা ও কার্যক্রম পরিচালনার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা যদি প্রয়োজন মনে করি, ইসলামিক আমিরাত এ কমিশনকে পুনরুজ্জীবিত করবে।
কারিমি আরও বলেন, এ সপ্তাহে সরকারের আরও দুটি মন্ত্রণালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো শান্তিবিষয়ক ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর আগে তালেবান নারীবিষয়কও মন্ত্রণালয় বন্ধ করে দেয়।
দেশটির নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৬ সালে আইইসি গঠন করা হয়েছিল। এ সংস্থার নির্বাচন পরিচালনার বাধ্যবাধকতা ছিল এবং সব ধরনের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতো।
কমিশনের সাবেক প্রধান আওরঙ্গজের এএফপিকে বলেন, তারা তাড়াহুড়া করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালেবান। কমিশনকে অকার্যকর করা ব্যাপক পরিণতি ডেকে আনবে।
সদ্য ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আরও একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ হালিম ফিদাই বলেন, এ সিদ্ধান্তে প্রমাণিত হয় তালেবান গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের বিরোধী। তারা বুলেটের জোরে ক্ষমতায় এসেছে, ব্যালটের মাধ্যমে নয়। ক্ষমতা নেওয়ার আগে এই নির্বাচন কমিশনের অনেক কর্মকর্তার প্রাণ গেছে তালেবানের হামালায়। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান তালেবানের শাসনে ছিল। এর মধ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদার নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার অভিযোগে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট সেখানে যৌথ অভিযান চালায়, যার মাধ্যমে তালেবান শাসনের অবসান ঘটে।
এরপর টানা ২০ বছর ধরে যুদ্ধ চলে তালেবান এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের সঙ্গে। অবশেষে ২০ বছরের আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ৩১ আগস্টের মধ্যে কাবুল ত্যাগ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র দেশগুলোর সেনারা। এরপর নতুন সরকার ঘোষণা করে তালেবান। ক্ষমতা নেওয়ার কয়েক মাস হলেও এখনও অস্থিরতা বিরাজ করছে আফগানিস্তানে। মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশটির অর্থনীতি। সূত্র : আল-জাজিরার, বিডিনিউজ, জাগোনিউজ, বাংলানিউজ। গ্রন্থনা : শোভন দত্ত