মহামারি সত্ত্বেও ভিয়েতনামে চাঙ্গা কফি শপের ব্যবসা
অর্থনীতি ডেস্ক : করোনার মহামারি চলা সত্ত্বেও ভিয়েতনামের ছোট অর্থাৎ কম খরচের ক্যাফের (কফি শপের) ফ্র্যাঞ্চাইজিং বেড়েছে। দেখা গেছে, এই শপগুলো ব্যবসায়ও অনেক ভালো করছে। বেড়েছে তাদের ব্যবসায়িক পরিধি। সোমবার ভিনএক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিদিন সকাল ৯টার দিকেই ভিয়েতনামের এইচসিএমসির ঢং রোডে একটি নাপোলি ক্যাফে ফ্র্যাঞ্চাইজে অনেক ভিড় দেখা যায়। এটির মালিক হোয়ং বলেন, আমারা প্রতিদিন সরাসরি শত শত গ্রাহককে সেবা দেই। তবে এর থেকে দ্বিগুণ সংখ্যক মানুষকে অ্যাপসে সেবা দেওয়ার কথা জানান তিনি।
পাম ভ্যান চিউ রোডে অবস্থিত মিলানোর ফ্র্যাঞ্চাইজ করা একটি ক্যাফেতে প্রচুর ভিড় থাকে সবসময়। এর কর্মচারীরা প্রতিদিন শত শত গ্রাহক পাওয়ার কথা জানান। জানা গেছে, মহামারি সত্ত্বেও এই ধরনের ক্যাফেগুলো ব্যবসায় লাভবান হচ্ছে। প্রধানত অ্যাপস ও ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমেই তারা গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে। নগুয়েন ডুক হাং, নাপোলি কফির প্রতিষ্ঠাতা। ভিনএক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, ২০১০ সালে তিনি তার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এটার তিন হাজারের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজিড আউটলেট আছে। মাসে দুই-তিনটি কফি শপকে ফ্র্যাঞ্চাইজি দেওয়ার কথাও জানান তিনি। তাদের অংশীদাররা অধিক শাখা নিতে আগ্রহী।
এখন ভিয়েতনামজুড়ে হাজার হাজার মিলানোর ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়েছে। ট্রং নগুয়েন ই-কফি ফ্র্যাঞ্চাইজড কফি শপ দেশটির ৫৪টি শহর ও বিভিন্ন প্রদেশে রয়েছে।
ফ্র্যাঞ্চাইজাররা তাদের ট্রেডমার্ক বা এই জাতীয় অন্যান্য ফিগুলোর জন্য রয়্যালটি নেন না। তাদের লাভের অধিকাংশই আসে কফি শপের নির্মাণ-সাজসজ্জা বা তাদের উৎপাদিত প্যাকেজ করা কফি ও পানীয়ের বিক্রয় থেকে। এইচএমসির ভ্যান ল্যাং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক লে আনহ তু বলেন, কম দামের ক্যাফে ফ্র্যাঞ্চাইজিং মডেলটি করোনা সত্ত্বেও উন্নতি লাভ করেছে। কারণ ফ্র্যাঞ্চাইজিরা ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অনেক সমর্থন করে। তাছাড়া এসব ক্যাফেতে যুক্তিসঙ্গত দামে কফি বিক্রি করা হয়।
অন্যদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যয় করছেন ভিয়েতনামের নাগরিকরা। ভিয়েতনামে মহামারির বেশি প্রভাব পড়ে ২০২১ সালে অর্থাৎ চলতি বছরে। এই সময়ে দেশটিতে মানুষের আয় কমে যায়। তাই অপরিহার্য নয় এমন পণ্যে ব্যয় কমান দেশটির নাগরিকরা। অর্থাৎ মানিয়ে চলার একটি প্রবণতা তৈরি হয় তাদের মধ্যে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি সংস্থা ভিয়েতনামের ১০ হাজার মানুষের ওপর একটি জরিপ চালিয়েছে। যা গত মাসে প্রকাশিত হয়। যাতে দেখা যায়, করোনার মহামারিতে ভিয়েতনামের মানুষের ব্যক্তিগত অর্থনীতিতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
জরিপে উত্তরদাতাদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ জানিয়েছেন, করোনার প্রকোপে এ বছর তাদের আয় কমেছে। ৫৩ শতাংশ বলেছেন, গত ছয় মাসে অপরিহার্য নয় এমন জিনিসে তারা ব্যয় কমিয়েছেন। ৮১ শতাংশ জানিয়েছেন, আগামী বছরও তারা তাদের অপরিহার্য নয় এমন জিনসের ওপর ব্যয় কামাবেন। সূত্র : জাগোনিউজ, বার্তা ২৪