ঋণ পরিশোধে করোনার বিশেষ সুবিধার মেয়াদ বাড়ছে না
অর্থনীতি ডেস্ক : দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধে যে বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছিল তার মেয়াদ আর বাড়ছে না। দুবছর পর এই সুবিধা উঠিয়ে নিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
ডিসেম্বরের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ পরিশোধ করেই খেলাপি না থাকার সুয়োগ ছিল। এই সুবিধার মেয়াদ আর বাড়ানো হচ্ছে না। বিশেষ এই সুবিধা তুলে নেয়ার ফলে ডিসেম্বরের পর ঋণ পরিশোধ না করলেই গ্রাহক খেলাপিতে পরিণত হবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মঙ্গলবার আয়োজিত ব্যাংকার্স সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানান গভর্নর ফজলে কবির। সভা শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, করোনার কারণে ঋণ পরিশোধে ব্যবসায়ীদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়। এর আওতায় চলতি বছরের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ শোধ করলে গ্রাহক খেলাপি হবেন না। এ সুযোগ নিয়ে অনেকে ঋণ নিয়মিত করতে পারবেন। এরপর এ সুবিধা আর বাড়বে না।
সম্প্রতি ব্যাংকের ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা আরও ছয় মাস অর্থাৎ ২০২২ সালে জুন পর্যন্ত বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। চিঠিতে যত দ্রুত সম্ভব ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধার মেয়াদ বৃদ্ধিসংক্রান্ত ঘোষণা দেয়ারও আহ্বান জানায় সংগঠনটি। সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, কে
রানাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ঋণের মাত্র ১৫ শতাংশ শোধ করলেই তারা খেলাপি হবেন না। বিশেষ সুবিধা হিসেবে এ ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে দেড় শতাংশ নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ করলেই চলবে। অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে তা ২ শতাংশ। করোনায় সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঋণগ্রহীতাদের চাপ কমাতে গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধে বিশেষ ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ২০২০ সালে পুরো বছর কিস্তি না দিলেও কোনো গ্রাহক খেলাপি হননি। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ ছাড় তুলে নেয়া হয়। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের সুদ পরিশোধ করতে বাড়তি সময় দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি বছরের মার্চে জারি করা সার্কুলারে বলা হয়, যেসব চলমান ঋণ বা বিনিয়োগের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে এবং প্রচলিত নীতিমালার আওতায় ব্যাংক কর্তৃক নবায়ন করা হয়নি সেসব ঋণ বা বিনিয়োগের বিপরীতে গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আরোপিত সুদ (অনাদায়ী থাকলে) চলতি বছরের মার্চ থেকে আগামী ২০২২ সালের জুনের মধ্যে ৬টি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে।
২০২০ সালের অনাদায়ী সুদ এ নিয়মে শোধ হওয়ার পাশাপাশি ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত আরোপিত সুদ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে নিয়মিতভাবে শোধ হলে এসব ঋণ ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে না।
তলবি ঋণের ক্ষেত্রে চলতি বছরের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৮টি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে শোধ করা যাবে। ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে কিস্তি পরিশোধ করে এসব ঋণ শ্রেণীকরণ করা যাবে না। তবে উল্লিখিত নিয়মে কোনও ত্রৈমাসিকে কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে এ সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে।