বিশ^জুড়ে অসহনীয় খাদ্য মূল্যস্ফীতি অব্যাহত
রাশিদ রিয়াজ : আগামী বছরে খাদ্যমূল্যস্ফীতি স্বাভাবিক ও সহনীয় মাত্রায় আসবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বাজার বিশ্লেষকরা। খাদ্য পণ্যের চাহিদা বাড়লেও পরিবহন খরচ ও চাষাবাদের উপকরণ সার ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারিরা বলছেন তাদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ভুট্টা, চিনি ও কোকার দাম এ কারণেই বাড়তি। একই সঙ্গে অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি আরেক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিএনএন
র্যাবোব্যাংকের কৃষিপণ্য বিশ্লেষক মিখায়েল ম্যাগদোভিৎজ বলেন শঙ্কা করছি খাদ্যমূল্য এধরনের বৃদ্ধির স্তরেই থাকবে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ফাওয়ের খাদ্য মূল্য সূচক গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। কোভিড মহামারিতে বিপর্যস্ত খাদ্য খাতে শ্রম ঘাটতি এমনকি কনটেইনার সংকটও জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন, বন্যা, খরার কারণে কৃষি উৎপাদন ব্যহত হয়েছে। গত বছর বিশে^ কৃষি পণ্যের দাম বেড়েছে ২৮ শতাংশ। র্যাবোব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে কোভিড মহামারির পূর্বের চেয়ে এখনো খাদ্যমূল্যস্ফীতি ৪০ শতাংশ বাড়তি রয়েছে। রিফিনিটিভ’র তথ্য বলছে ভুট্টার দাম রয়েছে এখনো ২৮ শতাংশ বেশি। গমের দাম বেড়েছে ২৪ শতাংশ এবং কফির মূল্য বেড়েছে ৮০ শতাংশ।
জাহাজে পরিবহন খরচ কিছুটা কমলেও তা এখনো নাগালের মধ্যে আসেনি। ভোক্তারা কোভিডের পূর্ববর্তী সময়ের মত খাদ্যপণ্য কিনছে না বরং প্রয়োজন অনুসারেই তা কিনছে। কোভিড মহামারি শুরুর পর্যায়ে মানুষ ব্যাপক পরিমানে খাদ্যপণ্য কেনায় বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে খাদ্যমূল্যস্ফীতির সঙ্গে যোগ হয়েছে এর পরবর্তী পর্যায়ের বিভিন্ন সংকট। কারণ বাজারে খাদ্যপণ্য মূল্যের হ্রাসেরও একটা সীমা রয়েছে। কৃষির ক্ষেত্রে উৎপাদকরা দ্রুত সরবরাহ বাড়াতে পারে না। দ্রুত আবাদযোগ্য জমি বৃদ্ধি করা বা নাটকীয়ভাবে ফলন বৃদ্ধি করা কঠিন। এরপর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে লা নিনা পরিস্থিতির কারণে ফলন ব্যাহত হয়েছে। যে কারণে সয়াবিনের ফলন মার খেয়েছে ও ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল, আর্জেন্টিনায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি, চীনে বন্যার কারণেও ফসল মার খেয়েছে। এমনকি আগামী বছরেও আকস্মিক বন্যা সহ দুর্যোগময় আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। খাদ্যপণ্য কোম্পানিগুলো বলছে তাদের প্যাকেজিং ও সরবরাহ খরচ বেড়েছে। শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করতে হয়েছে। ক্রাফ্ট হেইঞ্জ ও মনদেলেজ’এর মত বহুজাতিক কোম্পানিগুলো আগাম ঘোষণা দিয়েছে তারা আগামী বছর তাদের খাদ্যপণ্য মূল্য বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে।